স্টাফ রিপোর্টার: চলতি বছরের মতো করোনা (Coronavirus) সংক্রমণের কি ইতি ঘটতে চলেছে? অন্তত এমনটাই বলছেন স্বাস্থ্য দপ্তরের বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, করোনা টিকা (Vaccine) উৎপাদক সংস্থা ভারত বায়োটেকের বিশেষজ্ঞরা। তাই ওমিক্রনের সাব ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলার জন্য টিকার কোনও বদলের পরিকল্পনা নেই।
বিগত তিনমাসে কোভিড (COVID-19) সংক্রমণ অনেকটাই বেড়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় পরীক্ষা বাড়েনি। বস্তুত, দেশের নাগরিকদের মধ্যে কোভিড টেস্ট নিয়ে এবার শুরু থেকেই গা ছাড়া মনোভাব। সংক্রমণও কমতির দিকে। গত কয়েকদিনের তথ্য বলছে, রাজ্যে গড়ে দৈনিক করোনা পরীক্ষা ৩০০ পার করেনি। স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য বলছে, গত ২৬ তারিখ রাজ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয় ২৮৬ জনের। এরপর ক্রমশ কমতির দিকে।
ভারত বায়োটেকের চিফ ইনভেস্টিগেটর ডা. পার্থ সরকারের কথায়, ‘‘ভারতের করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। এখনও পর্যন্ত যে টিকা দেওয়া হয়েছে তার বদলের কোনও ইঙ্গিত আসেনি। এই টিকাই যথেষ্ট, তাই করোনা ভাইরাসের ওমিক্রনের এই স্ট্রেন রুখে দেওয়ার জন্য ভ্যাকসিন বদলের ইঙ্গিত মেলেনি।’’ পার্থবাবুর কথায়, ‘‘আগামী দিনে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো হবে করোনা। প্রায় রোজ কেউ না কেউ আক্রান্ত হবে। আবার সুস্থও হবে।’’
[আরও পড়ুন: হরিদেবপুর কাণ্ডে নয়া মোড়, মাকে ফাঁসাতে অবিশ্বাস্য ফন্দি কিশোরীর! হার মানাবে সিনেমাকেও]
১ মে ছুটির দিন ছিল বলে অনেক কম পরীক্ষা (৬০৬) হওয়ার কারণেই এত কম রোগী করোনা পজিটিভ চিহ্নিত হয়েছেন বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। রাজ্যে বর্তমানে ২১৪০ জন করোনা নিয়ে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে ১১৯ জন হাসপাতালে ভরতি। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে সংক্রমণের হার (১২.২%) কিছুটা কমেছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে মোটের উপর উন্নতিই হচ্ছে বাংলায় কোভিড পরিস্থিতির। যদিও মৃত্যু নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের চিন্তা কমছে না। দু’-একটি দিন বাদ দিলে, গত দু’সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিনই এক বা একাধিক কোভিড আক্রান্ত ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন রাজ্যে। মৃত্যুর সংখ্যাটা গত ১৪ দিনে ১৪ জন। মৃতরা অবশ্য প্রত্যেকেই হয় বয়স্ক নয়তো গুরুতর কোমর্বিডিটির শিকার।
এপ্রিলের ২০ থেকে ২৯ তারিখ পর্যন্ত মারা গিয়েছিলেন ১১ জন। তার পর রবি, সোম ও মঙ্গলবার যথাক্রমে মারা গিয়েছেন আইডি এবং দুর্গাপুর ও কলকাতার দু’টি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিন করোনা পজিটিভ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কমলে পাল্লা দিয়ে কয়েক দিন পর থেকে কমতে শুরু করবে অ্যাকটিভ কেস ও হাসপাতালে ভরতির সংখ্যাও। তখন দেখা যাবে, মৃত্যুও কমবে। যে ভাবে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কমছে, তা দেখে আশাবাদী ডা. দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘ক্রমশ সংক্রমণ কমছে। এত কম লোকের করোনা হচ্ছে যে, একে ঠিক ঢেউ বলা যায় না।’’