ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: করোনা কাঁটায় বিদ্ধ প্রিভেন্টিভ ডোজ! ১০ জানুয়ারি থেকে দেশে শুরু হয়েছে কেভিডের তৃতীয় বা প্রিভেন্টিভ ডোজ। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রথম দফায় চিকিৎসক, নার্স স্বাস্থ্যকর্মী ও কোমর্বিডিটি যুক্ত প্রবীণ নাগরিকদের টিকার বুস্টার ডোজ (Booster Dose) দেওয়া হচ্ছে। ঘটনা হল, একইসময়ে শুরু হয়েছে কোভিডের বলগাহীন সংক্রমন। তাহলে? যাঁরা এখন সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁরা কী করবেন? আবার অনেকেই এই সময়ে পজিটিভ হলেও টেস্ট করাননি। তাঁরা কবে বুস্টার বা প্রিভেন্টিভ ডোজ নেবেন?
ঢাকুরিয়ার বাসিন্দা অমল হালদার। পেশায় স্বাস্থ্যকর্মী। সেই কবে গত বছরের জানুয়ারিতে ২৮ দিনের ব্যবধানে দু’টি ডোজ নিয়েছিলেন। তারপরে ভালই ছিলেন। কিন্তু বাদ সাধল করোনা। ডিসেম্বরের ১০ তারিখ জ্বর, সর্দি। কোভিড পজিটিভ (COVID-19 Positive)। দিন দশেক ঘরবন্দি থেকে সেরে উঠেছেন। এর মধ্যেই প্রিভেন্টিভ ডোজের ঘোষণা। দিনকয়েক আগে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতেই প্রশ্ন, “এর মধ্যে কোভিড হয়েছিল?” সব জানতেই বলা হল, সুস্থ হওয়ার পর থেকে তিনমাস পর আসুন।
দ্বিতীয় ঘটনা। ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখ দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছিলেন যাদবপুরের গৌতম রায়। পুলিশে চাকরি করেন। অবসরের আর তিনমাস বাকি। ডায়বেটিস, হার্টের সমস্যা। এমন হাজার রোগ বাসা বেঁধেছে শরীরে। আশায় বুক বেঁধেছিলেন। এবার তৃতীয় ডোজ নেবেন। কিন্তু ফের কোভিড। ঠিক ১০ জানুয়ারি পজিটিভ হন। চিকিৎসক বলেন, “আপাতত থাক। হিসেব রাখবেন। সেরে ওঠার তিন মাস পর গিয়ে প্রিভেন্টিভ ডোজ নিয়ে আসবেন।”
[আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা, উলটে গেল বিকানের এক্সপ্রেস, বহু হতাহতের আশঙ্কা]
তৃতীয় ঘটনা। হাজরার নব্যেন্দু তালুকদার। আগস্টে দ্বিতীয় ডোজ নেন। হিসাব মতো তাঁর ৩৯ সপ্তাহ বা ন’মাস পরে মে মাসে তৃতীয় ডোজ পাওয়ার কথা। কিন্তু আপাতত নিভৃতবাসে। তাই নতুন করে হিসেব করে আরও তিনমাস অর্থাৎ আগস্টে তৃতীয় ডোজ পাবেন।
এ তো গেল একটা দিক। তৃতীয় সংক্রমণের পারদ আরও বাড়ছে। এই সময়ে অনেকেই কোভিড পরীক্ষাই করেননি। বা করাতে পারেননি। তাঁদের ক্ষেত্রে কি হবে? কো-উইন (Co-Win)পোর্টালে কিন্তু দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ৩৯ সপ্তাহ পরে তৃতীয় ডোজের কথা বলা হয়েছে। সেই নিয়মেই স্বাস্থ্যকর্মী ও বয়স্ক এবং কোমর্বিডিটিদের টিকা দেওয়ার কথা। কিন্তু সংক্রমিত হলে তিন সপ্তাহ পরে তৃতীয় বা প্রিভেন্টিভ ডোজ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক নিয়মে।
[আরও পড়ুন: WB Civic Polls: করোনা কালে টেলিকলারেই প্রচার, অভিনব উদ্যোগ চন্দননগরের তৃণমূল প্রার্থীর]
তবে ভারতে এমন ক্ষেত্রে তেমন কোনও স্পষ্ট গাইডলাইন নেই বলেই জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের হেমাটোলজি অ্যান্ড ব্লাড ট্রান্সফিউশনের অধ্যাপক বিপ্লবেন্দু তালুকদার। ডাক্তার তালুকদারের কথায়, “সংক্রমিত হওয়ার তিনমাস পর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কথা বলা আছে। কিন্তু যাঁরা পরীক্ষাই করেননি। কিন্তু ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের কী নিয়ম হবে, তা ভারত বা পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট গাইডলাইন নেই।”