স্টাফ রিপোর্টার: বড়দিনের একমাসও বাকি নেই। বাক্স-প্যাঁটরা গোছাতে শুরু করেছে বাঙালি। এমনই সময় ওমিক্রনের আত্মপ্রকাশ। করোনার (Coronavirus) নতুন ভ্যারিয়্যান্ট কতটা ভয়াবহ? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অগ্রাধিকারের কর্ম তালিকা প্রকাশ করেছে। সেখানেই ঝুঁকি প্রশমন তালিকায় বড় বড় করে লেখা, ‘আপাতত ঘুরতে যাওয়া স্থগিত রাখুন।’ সেই পরামর্শ মেনে চলার পাশাপাশি টিকার জোড়া ডোজ নিয়েও ওমিক্রনের সংক্রমণ থেকে আত্মরক্ষা করা যাবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বাংলার প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ করোনা টিকার (Corona vaccine) দ্বিতীয় ডোজ পেয়ে গিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী এদের ঘুরতে যেতে বাধা নেই। ডবল ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেট হাতে রাখলে হোটেলেও ঢুকতে দিতে বাধ্য। কিন্তু বিষয়টা কি এতটাই সোজা? ওমিক্রনের বিরুদ্ধে দু’ডোজের ভ্যাকসিন আদৌ কতটা কাজের, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স (AIIMS) বা এইমস-এর কর্ণধার রণদীপ গুলেরিয়া জানিয়েছেন, নতুন ভ্যারিয়্যান্ট বি.১.১.৫২৯ এতটাই চরিত্র বদলেছে যে, টিকা কাজ না-ও করতে পারে। স্রেফ একটি বাক্যেই থরহরিকম্প।
[আরও পড়ুন: মাটির ভাঁড়ে রোজ চা পান করুন, মিলবে দারুণ উপকার]
এইমস কর্ণধারের এই বক্তব্যে আশঙ্কা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে আমজনতার মনে। ডবল ডোজ টিকা নিয়েও তবে নিস্তার নেই? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, ভাইরাসের চরিত্রে এতটাই পরিবর্তন হচ্ছে যে, তা ভ্যাকসিনের অ্যান্টিবডিকে (Antibody) ফাঁকি দিতে পারে। কিন্তু সম্ভাবনা রয়েছে শরীরে যে মেমরি টি সেল তৈরি হয়েছে তা তাকে পর্যুদস্ত করবে। জনস্বাস্থ্য আধিকারিক অনির্বাণ দলুই জানিয়েছেন, টিকা নেওয়ার পর অথবা যাঁরা করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের শরীরে টি সেল তৈরি হয়েছে। নোভেল করোনার সঙ্গে চরিত্রগত মিল রয়েছে, এমন কোনও ভাইরাস শরীরে ফের হামলা চালালে টি সেল তাকে চিনতে পেরে যুদ্ধ করবে। সেটাই শেষ ভরসা। যদিও টিকার জোড়া ডোজ নিয়ে আশা ছাড়তে রাজি নন শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. দীপ্তেন্দ্র সরকার। তাঁর কথায়, এটা প্রমাণিত, বাজার চলতি ভ্যাকসিন করোনা মৃত্যুহার কমিয়েছে। আক্রান্ত হলেও শরীরে হাল শোচনীয় হচ্ছে না। সকলের উচিত, দ্রুত ভ্যাকসিন নেওয়া।
[আরও পড়ুন: আবহাওয়ার রদবদলে বাড়তে পারে ভাইরাসের প্রকোপ! জেনে নিন কীভাবে থাকবেন সুস্থ]
তবে এই মুহূর্তে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. দীপ্তেন্দ্র সরকার। এদিকে বড়দিনের ছুটির আগে নতুন ভ্যারিয়্যান্টের আত্মপ্রকাশে প্রমাদ গুনছেন হোটেল-রেস্তরাঁর মালিকরা। পূর্ব ভারতের হোটেল এবং রেস্তেরাঁ অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাস্টিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল অতিক্রম গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, রেস্তরাঁ ব্যবসায় ২০২০ সাল ছিল অত্যন্ত হতাশাজনক। ফের যখন একটু একটু করে ভিড় বাড়ছে, তখনই নতুন স্ট্রেন ওমিক্রন। তবে একটাই বাঁচোয়া, এখনও এ দেশে ওমিক্রন ভ্যারিয়্যান্ট ধরা পরেনি।