স্টাফ রিপোর্টার: মৃত বিজেপি নেতা অর্জুন চৌরাশিয়ার ময়নাতদন্তের পর তাঁর শরীরে থাকা জামা, প্যান্ট, জুতো ও অন্য সামগ্রী না দেওয়ার অভিযোগে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য। দাবি ছিল, আলিপুর কমান্ড হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ দিতে অস্বীকার করেছে। শুক্রবার এই মামলায় হাসপাতাল রাজেশ চৌরাশিয়ার সমস্ত পোশাক ও ভিসেরা রিপোর্ট রাজ্যের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চকে জানাল রাজ্য।
অন্যদিকে প্রশ্ন উঠেছে, অনলাইন জুয়ার নেশায় কি বেতনের প্রায় পুরো টাকাই খুইয়েছিলেন অর্জুন চৌরাসিয়া? কারখানা থেকে রাতে বাড়ি ফেরার পর পরিবারের হাতে বেতনের টাকাও দিতে পারেননি বলেই খবর পেয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাই অর্জুনের ঝুলন্ত দেহের পকেটে ছিল মাত্র ৫০০ টাকা। এই ধরনের কিছু তথ্য পুলিশের কাছেও এসেছে। যদিও পুলিশের পক্ষে এই তথ্যগুলি যাচাই করা হচ্ছে। এদিকে, ফরেনসিক চিত্রগ্রহণে উঠে এসেছে কাশীপুর কলোনির পরিত্যক্ত ঘরে অর্জুন চৌরাসিয়ার আত্মঘাতী হওয়ার বেশ কিছু প্রমাণ। শুক্রবার অর্জুনের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তৈরি বিশেষ অনুসন্ধানকারী দল বা ‘সেট’-এর সদস্যরা তাঁর বেশ কয়েকজন বন্ধুর বক্তব্য গ্রহণ করেন। আলিপুরের কমান্ড হাসপাতাল থেকে অর্জুন চৌরাসিয়ার ভিসেরা, জামাকাপড় ও ফাঁসের কাপড় পুলিশের হাতে এসেছে। সেগুলি ফরেনসিকে পাঠানো হবে।
[আরও পড়ুন: দোকানের বাইরে পাহারায় মুণ্ডহীন নিরাপত্তারক্ষী! কীভাবে সম্ভব? ছবি দেখে তাজ্জব নেটদুনিয়া]
এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি বিশেষ অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন অর্জুন। বিষয়টি অর্জুনের বন্ধুবান্ধবরা জানতে পারলে তাঁরাও বারণ করেছিলেন। কিন্তু সেই আসক্তি এমন জায়গায় ছিল যে, শুধু ওই খেলার জন্য লক্ষাধিক টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। সেই চাপ এসে পড়েছিল পরিবারের উপর। গত তিন মাস ধরে এই বিষয়টি নিয়েও পরিবারে চলছে গোলমাল। এমনকী, বিষয়টি নিয়ে পরিবারের অন্যরা বকাবকিও করেন পরিবারের কনিষ্ঠপুত্রকে।
গত ৫ মে গেঞ্জির কারখানার কর্মী অর্জুনকে ১১ হাজার ১০০ টাকা বেতন দেন সুপারভাইজার তথা তাঁরই দাদা আনন্দ চৌরাসিয়া। চিৎপুরের বাসিন্দা ও বন্ধুরা জেনেছেন, বেতন পাওয়ার পরই উত্তর কলকাতারই (North Kolkata) একটি জায়গায় গিয়ে অনলাইন জুয়া খেলে বেতনের প্রায় সাড়ে দশ হাজার টাকা খুইয়ে ফেলেন অর্জুন। বাড়িতে আসার পর কোনও টাকা দিতে পারেননি। টিফিনবক্স রেখে ওই গামছাটি নিয়ে বেরিয়ে যান। তবে সেদিন সন্ধ্যায় এই কারণে কথা কাটাকাটি বা গোলমাল হচ্ছিল কি না, সেই তথ্য পুলিশও জানার চেষ্টা হচ্ছে।