সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা পরিস্থিতিতে চলে গিয়েছিল কাজ। ঘরের নুন আনতে পান্তা ফুরনোর মতো অবস্থা। আধপেটা খেয়ে প্রথম কয়েকমাস দিন কেটেছে। এবার শুরু হয়েছিল অনাহারের পালা। সংসার কীভাবে চলবে তার কোনও কূল কিনারা পাওয়া যাচ্ছিল না। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে নিজের কন্যাসন্তানকে (Baby girl) বিক্রি করে দিল এক দম্পতি। মেদিনীপুরের কোতয়ালি থানার হরিজন পল্লির ঘটনা শুনেই অবাক হচ্ছেন অনেকে।
খুদের কাকা জানিয়েছেন, সংসার চালাতে পারছিলেন না তাঁর দাদা এবং বউদি। তাই তারা তাদের আট মাসের সন্তানকে মাত্র চার হাজার টাকায় একজনের কাছে বিক্রি করে দেয়। দাদা-বউদির কার্যকলাপ জানতে পারেন শিশুর কাকা। খুব কষ্ট করে চার হাজার টাকা জোগাড় করেন তিনি। তারপর নিজেদের ঘরের সন্তানকে বৃহস্পতিবারই ফিরিয়ে আনেন। তবে শিশুটিকে আর দ্বিতীয়বার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেননি তিনি। তার পরিবর্তে শিশু সুরক্ষা দপ্তরের হাতে আট মাসের ভাইঝিকে তুলে দেন। স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর শিশুটি বর্তমানে মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর বালিকা ভবনের শা হোমে রয়েছে।
[আরও পড়ুন: গৃহস্থের পুকুরে পাঁচ ফুটের কুমির! স্নানে নেমে আতঙ্কে কাঁটা পাথরপ্রতিমার বধূ]
ঘটনায়, চাইল্ড রাইট কমিশনের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাখার প্রাক্তন চেয়ারপার্সন মৌ রায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কন্যাশ্রী, খাদ্যসাথীর মতো একাধিক প্রকল্প চালু করেছে। তা সত্ত্বেও রাজ্যে এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত লজ্জার। কন্যাসন্তান জন্ম নিয়ে এখনও সেই অতীতের মতোই ভাবনাচিন্তা হয়। তাদের উপর নানাভাবে নির্যাতন করা হয়। এমনকী বিক্রি করার অভিযোগও ওঠে। এ ধরনের ঘটনা কমাতে আরও জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন।” এদিকে, এ খবর পাওয়ামাত্রই কোতয়ালি থানার পুলিশ ওই শিশুর বাবা-মাকে আটক করে। বর্তমানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। চরম অভাবের তাড়না নাকি অন্য কোনও কারণে নিজের দুধের সন্তানকে বিক্রি করল তারা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।