সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ‘খোলা জায়গায় কোনও যুগলকে যেন দেখা না যায়।’ পুরুলিয়ায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলের সতর্কীকরণ পোস্টারে বিতর্ক দেখা দিয়েছে পুরুলিয়ায়। কিশোর–কিশোরী থেকে তরুণ–তরুণীর মধ্যে রীতিমত ক্ষোভের আগুন জ্বলছে এই জেলায়। সরস্বতী পুজোকে সামনে রেখে হুগলি, বাঁকুড়ার পর পুরুলিয়াতেও এমন পোস্টার পড়ল। সরস্বতী পুজো পার হয়ে গেলেও এই জেলার জয়পুর, ঝালদা, পাড়া, কাশীপুর ও পুরুলিয়া শহরে এমন পোস্টারের দেখা মিলেছে। তবে এই পোস্টার বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলের নয় বলে জানিয়েছে ওই দুই সংগঠন।
গত বুধবার থেকেই পুরুলিয়ার একাধিক থানা এলাকায় এই পোস্টার দেখা যায়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তা কার্যত ছেয়ে যায় সমগ্র জেলায়। ছাপানো ওই পোস্টারে সতর্কীকরণ শিরোনামে লেখা রয়েছে, “বাংলার বিদ্যার দেবী সরস্বতী পুজো। যা অনেক বাঙালি মনে করেন ‘ভালোবাসা’–র উৎসব, ভারতীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী। সুতরাং বিশ্বহিন্দু পরিষদ এবং বজরং দলের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হচ্ছে ওই দিন খোলা জায়গায় কোন যুগল যেন দৃষ্টিতে না আসে। দৃষ্টিকটু অবস্থায় না দেখা যায়। এরকম ঘটনায় তাদের বাবা–মায়ের সাথে আলোচনা বা প্রয়োজনে বিবাহের ব্যবস্থা করা হবে। আগামী নির্বাচনের পর বিজেপি সরকার পশ্চিমবঙ্গে লাভ জিহাদ ও ব্যাভিচারের বিরুদ্ধে আইন আনবে এবং বাঙালি যুবক–যুবতীদের চরিত্রের উন্নতির জন্য নানা ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” পোস্টারের তলায় লেখা আছে দেশের বল, বজরং দল।
[আরও পড়ুন : বিবেক দংশন! ওষুধ লেখা নিয়ে বিতর্কের পর বৃদ্ধার চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন চিকিৎসক]
এছাড়া ওই পোস্টার জুড়ে আছে জয় শ্রীরাম শব্দ। এই পোস্টারের বিরুদ্ধে সরব হয়ে মাঠে নেমেছে তৃণমূল। দলের জেলা মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি বলেন, “সরস্বতী পুজোয় কিশোর–কিশোরী থেকে তরুণ–তরুণীরা একসাথে বসন্ত পঞ্চমী উৎসবের আয়োজন করেন। এটাই বাঙালির রীতি। কিন্তু তা বন্ধ করার ফতোয়া বাঙালি কোন ভাবেই মেনে নেবে না। আমরা এই পোস্টারের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।” কিন্তু যাদের নামে এই পোস্টার সেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পুরুলিয়ার সম্পাদক পিন্টু বাউরি বলেন, “এই পোস্টার আমাদের নয়। আমাদের বদনাম করার জন্য সমাজবিরোধীরা এই কাজ করছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি কাদের এই কাজ।”
ছবি: অমিতলাল সিং দেও