গোবিন্দ রায়: ববিতা সরকারের দায়ের করা মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশই বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ। হাই কোর্টে খারিজ ওএমআর শিট প্রকাশ না করার আবেদন। উত্তরপত্র প্রকাশ করলেও তার উপর ভিত্তি করে এখনই কারও চাকরি বাতিল করা যাবে না বলেই জানিয়েছে হাই কোর্ট।
গত বছরের জুলাই মাসে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতার শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ বেআইনি বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta HC) মামলা করেছিলেন শিলিগুড়ির ববিতা সরকার। তাঁর বক্তব্য ছিল, ওই চাকরির যোগ্য দাবিদার তিনিই, মন্ত্রীকন্যা ক্ষমতা দেখিয়ে তা দখল করেছেন। উচ্চ আদালতে ববিতার অভিযোগ প্রমাণের পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি খারিজ হয় অঙ্কিতার। সেই জায়গায় চাকরি পান ববিতা। শুধু তাই নয়, অঙ্কিতার ৪৩ মাসের বেতনের টাকাও ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। সেই টাকা ববিতাকে দেওয়া হয়। ববিতা চাকরি পাওয়ার কয়েকমাস পর তাঁর নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ওই পদের অন্যতম দাবিদার অনামিকা রায়।
[আরও পড়ুন: মেধার জোরে ২ বছর বয়সেই ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে নাম তুলল দুর্গাপুরের খুদে, গর্বিত বাবা-মা]
তাঁর বক্তব্য ছিল, ববিতার প্রাপ্ত নম্বর ৬০ শতাংশ নয়। অথচ তিনি ৬০ শতাংশ লিখেছেন ফর্মে। তাতেই ববিতার অ্যাকাডেমিক স্কোর বেড়ে গিয়েছে। হিসেবমতো ববিতার থেকে নম্বর বেশি অনামিকার। ফের শুরু হয় মামলা। যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে ববিতা সরকারের সুপারিশপত্র বাতিল করে পর্ষদ। ফলে ববিতা সরকারও চাকরি হারান। সেই চাকরি পান অনামিকা রায়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেন ববিতা। কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন তিনি। সেই মামলার এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। তারই মাঝে ফের নতুন করে আদালতের দ্বারস্থ ববিতা সরকার। ২০১৬ সালের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র এবং বিস্তারিত মেধাতালিকা প্রকাশের আবেদন জানান।
ওই মামলাতেই ওএমআর শিট প্রকাশ না করার আবেদন খারিজ করে বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। তবে তালিকায় নাম প্রকাশের পর যদি কোনও শিক্ষকের চাকরি পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন থাকে তাহলে সিঙ্গল বেঞ্চ আগে তাদের শুনানির সুযোগ দেবে। তারপরেও সুপ্রিম কোর্টে এই সংক্রান্ত যে মামলা আছে তার নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। তারপই তাদের চাকরি নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে। এসএসসির আবেদনে ২১ জুলাইয়ের পরিবর্তে ২৮ জুলাই পর্যন্ত তালিকা প্রকাশের সময় বাড়ায় ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের পর্যবেক্ষণ, “সরকারি চাকরি নিয়ে দুর্নীতি হলে কোনও আদালতই চোখ বুজে থাকতে পারে না। এক্ষেত্রেও আদালত সেটা অস্বীকার করতে পারে না।”