গৌতম ব্রহ্ম: নির্দ্বিধায় কোভিড (COVID-19 Vaccine) টিকা নিন। টিকার কার্যকারিতা সমীক্ষায় প্রমাণিত। কোভিড টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার অনেকটাই কম। রীতিমতো পরিসংখ্যান দিয়ে এমনটাই জানাল চণ্ডীগড়ের PGIMER। কোভিড টিকা নিয়েছেন এমন প্রায় সাড়ে ১২ হাজার জনের উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। এর পরই আমজনতার কাছে তাঁদের আবেদন, ভ্যাকসিন নিতে অযথা ভয় পাবেন না। একাধিক সমীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে সংক্রমণ রুখতে কোভিড টিকার কার্যকারিতা।
মহামারী রুখতে একমাত্র ভরসা কোভিড ভ্যাকসিন। অথচ সেই টিকা নিয়ে একাধিক গুজব ছড়িয়েছে। অনেকে আবার ভ্যাকসিন নিতে ভয় পাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে চণ্ডীগড়ের PGIMER তাদের সমীক্ষার তথ্য প্রকাশ করল। কী বলছে তাদের সমীক্ষার রিপোর্ট?
[আরও পড়ুন: রান্নায় কালো জিরে ফোড়ন ব্যবহার করেন? ছোট্ট এই দানাগুলির উপকার জানলে অবাক হবেন]
কোভিশিল্ড টিকা নিয়েছেন এমন প্রায় ১২ হাজার ২৪৮ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীর উপর সমীক্ষা চালিয়েছেন চণ্ডীগড়ের বিশেষজ্ঞরা। টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন এমন ৭ হাজার ১৭০ জন মধ্যে মাত্র ১৮৪ জন (২.৬ শতাংশ) করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন এমন ৩ হাজার ৬৫০ জনকে পর্যবেক্ষণে রেখেছিল সংস্থাটি। দেখা যায়, তাঁদের মধ্যে মাত্র ৭২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। যা টিকার সেকেন্ড ডোজ গ্রহীতার মোটে ২ শতাংশ। এদিকে দুটি ডোজ নেওয়ার পর ১৪ দিন পেরিয়ে গিয়েছে এমন ৩ হাজার জনকে নিয়ে সমীক্ষা চালায় চণ্ডীগড়ের PGIMER। তাতে দেখা যায়, তাঁদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন মোটে ৪৮ জন (১.৬৮ শতাংশ)।
এই সমীক্ষা থেকে স্পষ্ট, করোনা ভ্যাকসিন নিলে কমছে সংক্রমণের হার। সমীক্ষায় উঠে এসেছে আরও একটি বিষয়। দেখা যাচ্ছে, ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ১৪ দিন পর করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা সবচেয়ে কম। এই পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করেই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ভ্যাকসিন নেওয়ার পক্ষে জোরদার সওয়াল করেছেন। তাঁদের মত, কোনও গুজবে কান দেবেন না। ভ্যাকসিন নিলে যৌনক্ষমতা কমে না। ভ্যাকসিন নিলে অন্য কোনও রোগের সম্ভাবনা বাড়ে না। বড়জোর এক-দু’দিনের জন্য জ্বর বা গা-হাত পা ব্যথা হতে পারে। করোনা থেকে সুরক্ষার জন্য এই কষ্ট বোধহয় স্বীকার করাই যায়। এমনই মত আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জনস্বাস্থ্য বিভাগের অধ্যাপক অনির্বাণ দলুইয়ের। তাঁর পর্যবেক্ষণ, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের একটা অংশের মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার বিষয়ে একটা অনীহা দেখা যাচ্ছে। সুকৌশলে কিছু গুজব তৈরির চেষ্টা হয়েছে। প্রশাসন এ বিষয়ে অবহিত। স্বাস্থ্যকর্তারাও গুজব নিরসনের জন্য হরেক পদক্ষেপ করেছেন। এবার চণ্ডীগড়ের এই পরিসংখ্যান টিকা অভিযানকে আরও জোরদার করবে।
[আরও পড়ুন: কাদের কতদিন ধরে দিতে হবে করোনার ভারতীয় ওষুধ 2-DG? জানাল কেন্দ্র]
পরিশেষে বলে রাখা দরকার, এই সমীক্ষা কোভিশিল্ড টিকা গ্রহীতাদের উপর চালানো হয়েছে মানে এমনটা নয় যে একমাত্র এই টিকাই সুরক্ষিত বা কার্যকর। কারণ কোভ্যাক্সিন-সহ অন্যান্য টিকার কার্যকারিতা নিয়েও একাধিক সমীক্ষা হয়েছে। সেই ভ্যাকসিনগুলির কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে।