সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা (Coronavirus) আক্রান্ত হওয়ার পরে হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন এক মহিলা। অভিযোগ, এই অবস্থায় তাঁকে ধর্ষণ করে এক হাসপাতাল কর্মী। এরপরই ওই মহিলার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হয় তাঁর।
অভিযুক্ত মেল নার্সের কাজ করা ওই কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চূড়ান্ত নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) ভোপালে (Bhopal)।
ঠিক কী হয়েছিল? পুলিশ জানাচ্ছে, গত ৬ এপ্রিল ভোপাল মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভরতি হন ৪৩ বছরের এক মহিলা। সেই সময়ই তাঁকে ধর্ষণ করে অভিযুক্ত হাসপাতাল কর্মী। দ্রুত শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মহিলাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই মৃত্যু হয় তাঁর। তবে মারা যাওয়ার আগে এক চিকিৎসকের কাছে বিবৃতি দিয়ে শনাক্ত করে যান অভিযুক্তকে। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ গ্রেপ্তার করে ৪০ বছরের সন্তোষ আহিরওয়ারকে। ভোপাল সেন্ট্রাল জেলে রাখা হয়েছে তাকে। শিগগিরি শুরু হবে বিচার প্রক্রিয়া।
[আরও পড়ুন: কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিনের পর এবার ভারতের বাজারে রাশিয়ার টিকা স্পুটনিক ভি, মিলবে কবে?]
কিন্তু এক মাসেরও বেশি সময়ের আগের ঘটনা কেন এতদিন পরে জানাচ্ছে পুলিশ? এক সিনিয়র পুলিশ অফিসারের কথায়, ‘‘ওই রোগিণীর অনুরোধ ছিল, তাঁর নাম যেন প্রকাশ না করা হয় এবং ঘটনাটির কথাও যেন এখনই প্রকাশ্যে না আনা হয়। সেই কারণেই এতদিন পর্যন্ত ঘটনাটির কথা গোপন রাখা হয়েছিল। কেবল তদন্তকারী দল এবিষয়ে জানত।’’
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় বেসামাল দেশ। একদিকে যেমন হু হু করে বেড়েছে সংক্রমণ, অন্যদিকে ক্রমেই প্রকট হয়েছে হাসপাতালগুলিতে বেডের আকাল এবং অক্সিজেনের অভাব। এই রকম এক পরিস্থিতিতে যেথানে করোনা রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা দেওয়ার কথা, এভাবে হাসপাতালেরই এক কর্মীর হাতে তাঁর এমন ভয়ঙ্কর লাঞ্ছনা নিয়ে সরব অনেকেই। প্রসঙ্গত, ওই মহিলা ১৯৮৪ সালের ভয়াবহ ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার কবলে পড়েও শেষ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু এবার অতিমারীর সময়ে নৃশংসতার শিকার হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ভোপাল দুর্ঘটনায় যাঁরা বেঁচে গিয়েছিলেন, তাঁদের একটি সংগঠন রয়েছে। মহিলা ছিলেন সেই সংগঠনেরই সদস্য। সেই সংগঠনের তরফে আঙুল তোলা হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দিকেও। কী করে এমন ঘটনাকে চেপে যেতে চাওয়া হয়েছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে তাদের তরফে লেখা চিঠিতে।
জানা যাচ্ছে, অভিযুক্ত সন্তোষের নামে এর আগেও ২৪ বছরের এক নার্সের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল। এমনকী, কাজের সময় মদ্যপান করার অভিযোগে তাকে বরখাস্তও করা হয়েছিল। কী করে এমন একজনকে চাকরিতে বহাল রাখা হল, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।