সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: নতুন বছর শুরুর মুখেই সুখবর। করোনা (Coronavirus) ভাইরাসের টিকা হিসেবে ছাড়পত্র পেতে চলেছে ‘কোভিশিল্ড’। সব ঠিকমতো চললে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জরুরি ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন দিতে চলছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। জানা গিয়েছে, এসএসকেএমের (SSKM) স্বাস্থ্য কর্মীদেরই প্রথম দেওয়া হবে ভ্যাকসিন।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং ওষুধ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিন ‘কোভিশিল্ড’-এর কার্যকারিতা বাকি ভ্যাকসিন থেকে অনেকটা বেশি। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী ক্ষমতা প্রায় ৬৪ শতাংশ। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেকটাই কম, এমনটাই দাবি বিশেষজ্ঞদের। এমনকী ব্রিটেন বা ব্রাজিলে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যেমন ফল মিলেছে ভারতেও প্রায় একইরকম কার্যকারিতা পেয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। তাই সমস্ত দিক খতিয়ে দেখার পর কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এই ভ্যাকসিন। বস্তুত দু’দিনের মধ্যেই এই ভ্যাকসিনের ছাড়পত্র মিলবে বলে আইসিএমআর সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, প্রথম দফায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেশের ৩০ কোটি নাগরিক টিকার আওতায় আসবেন। এরমধ্যে যেমন দেশের স্বাস্থ্য কর্মী অর্থাৎ চিকিৎসক, নার্স স্বাস্থ্যকর্মী অর্থাৎ প্রথম সারির করোনা যোদ্ধারা রয়েছেন, তেমনই পঞ্চাশোর্ধ্ব নাগরিক থাকবেন। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দেশে প্রথম পর্যায়ের টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হবে। শেষ হবে জুন মাসের শেষ সপ্তাহে।
[আরও পড়ুন: আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে বিজেপি, নাম-ধাম লিখে জমা দিন ড্রপ বক্সে]
এদিকে করোনাসুর বধে প্রথম সারিতেই রয়েছে রাজ্যের এসএসকেএম হাসপাতাল। সেই কারণে স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশে এসএসকেএম হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রথম ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলেই খবর। জানা গিয়েছে, টিকা দেওয়ার কাজ চূড়ান্ত করতে হাসপাতালে গঠিত হয়েছে চার সদস্যের বিশেষ কমিটি। আজ, মঙ্গলবার কমিটির সদস্যরা আলোচনায় বসবেন। ঠিক হবে হাসপাতালের ১০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে সুষ্ঠুভাবে করোনা ভ্যাকসিন দিতে কোন পথে এগোনো হবে। ভ্যাকসিন পাওয়ার দৌড়ে এরপরেই রয়েছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। কিন্তু কোন ভ্যাকসিন দেওয়া হবে? নতুন বছরের দ্বিতীয় সপ্তাহে সেই তথ্য চলে আসবে, এমনটা ধরে নিয়েই প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। এদিকে কোভিশিল্ড ছাড়পত্রের অপেক্ষায়। স্বাস্থ্যদপ্তরের এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘‘করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য প্রথমেই রয়েছে এসএসকেএম। হাসপাতালের ছাত্র, শিক্ষক, নার্স, চিকিৎসক-সহ প্রায় ১০ হাজার কর্মীকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এরপরেই রয়েছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল এবং আরজিকর। আরজি কর হাসপাতালের প্রিন্সিপাল ডা. প্রবীর মুখোপাধ্যায় জানান, হাসপাতালের সাড়ে তিন হাজারের বেশি স্বাস্থ্য ও অন্যান্য কর্মীদের করোনা টিকা দেওয়ার জন্য নন-মেডিক্যাল ডেপুটি সুপার আখতার আলি নোডাল অফিসার হিসাবে দেখভাল করবেন।
উল্লেখ্য, ভ্যাকসিন নিয়ে চূড়ান্ত তৎপরতার মাঝেই কেন্দ্রীয় সংস্থা কোল ইন্ডিয়া এবং রুরাল ইলেকট্রিক করপোরেশন রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরকে অন্তত ৭৩টি আইসলাইন রেফ্রিজারেটর দিয়েছে। করোনার ভ্যাকসিন সংরক্ষণে এগুলি কাজে লাগবে। আবার কোল ইন্ডিয়া এককভাবে একটি রেফ্রিজারেটর ভ্যান দিচ্ছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, প্রায় দু’বছর পর করোনা ভ্যাকসিনের দৌলতে কেন্দ্রের তরফে এই ভ্যান স্বাস্থ্য দপ্তর।