বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: শহরের শ্রমজীবী, গরিব মানুষ ও বেকার যুবকদের সমর্থন এখনও তৃণমূলের দিকেই আছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) জনমুখী প্রকল্প তাঁদের আকৃষ্ট করেছে। ফলে এই অংশের মানুষ বামপন্থীদের স্বাভাবির মিত্র হওয়া সত্বেও তাঁদের সংগঠিত করতে পার্টি ব্যর্থ। স্বীকার করল সিপিএম (CPIM)।
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে সিপিএমের কলকাতা জেলার সম্মেলন। তার আগে বুধবারই রাজ্যের পুরভোটের (West Bengal Civic Polls) ফলাফল ঘোষণা। সম্মেলনের খসড়া দলিলের ৪৩ নম্বর পাতায় পার্টি সংগঠন নিয়ে আলোচনায় উল্লেখ করা হয়, এর পিছনে মূল কারণ সাংগাঠনিক দুর্বলতা। এছাড়াও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতা। সম্মেলনে বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে খসড়া দলিলে।
[আরও পড়ুন: নেই যুদ্ধের প্রভাব, কলকাতা বইমেলার শুরুতেই রাশিয়ার স্টলে ভিড়]
গত তিনবছরে কলকাতা শহরেই সিপিএমের (CPIM) সদস্য কমেছে প্রায় দেড় হাজার। ব্যাপক সংখ্যক ছাত্র ও যুব পার্টিতে যোগদানে আগ্রহ দেখালেও কেন সদস্য কমলো বিশ্লেষণ করতে বসে মাথার চুল ছিঁড়ছেন কমরেডকুলের নেতারা। তাঁদের অকপট স্বীকারোক্তি, বিশ্বায়নের ফলে শহরে বহুতল বাড়ছে। সেই বহুতল নির্মাণের সঙ্গে বেকার যুবকদের যুক্ত করে সাময়িক রোজগারের পথ করে দিচ্ছে শাসকদলের নেতারা। এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্প মারফত এবং প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুবসমাজকে আকৃষ্ট করে রেখেছে। ফলে মানুষের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্ঠা হলেও অনেকক্ষেত্রে তা নির্জিব হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: বইমেলার ব্যানারে নেতাজির ‘মৃত্যুদিন’, তুঙ্গে বিতর্ক, কাঠগড়ায় গিল্ড]
পাশাপাশি, রেল দপ্তর হিসেব তুলে ধরে দলিলে লেখা হয়েছে, কর্মসূত্রে প্রতিদিন শহরে প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ আসেন। সিংহভাগ অংশই অসংগঠিত শিল্পের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু সাংগাঠনিক দুর্বলতার কারণে এদের কাছে পৌঁছনো যাচ্ছে না। পার্টি সদস্য কম হওয়ার কারণেই এই পরিস্থিতি বলে দলিলের ৪৫ নম্বর পাতায় উল্লেখ করা হয়েছে। আবার খসড়ার ৪৭ নম্বর পাতায় পার্টি সদস্যদের লেভি দেওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা দেখা দিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে স্বীকার করা হয়েছে যে, পরপর তিনমাস লেভি না দিলে পার্টির সদস্যপদ থাকে না। কিন্তু পার্টির ১১ হাজার সদস্যর মধ্যে প্রায় ৮ হাজার জন লেভি নিয়মিত দেননি। টানা একবছর লেভি দেননি এমন সদস্যর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। কিন্তু জেলা পার্টির কাছে লেভি সময়মতো দিয়েছেন বলে মিথ্যে রিপোর্ট পাঠানো হয় বলে খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে। অনেক সদস্য আবার শুধু লেভি দিয়েই দায়িত্ব পালন করছেন। পার্টির কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে অনীহা দেখা দিয়েছে। সিংহভাগ পার্টি সদস্যই কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন না বলে ক্ষোভপ্রকাশ করা হয়েছে।