বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বনাম শুভেন্দু অধিকারী বনাম …? রাজ্যের সবচেয়ে হেভিওয়েট কেন্দ্রে তৃতীয় প্রার্থীর নামটিও হোক হেভিওয়েট। এমনটাই চাইছে বামফ্রন্টের সবচেয়ে বড় শরিক সিপিএম। তাই নন্দীগ্রাম আসনটি জোটসঙ্গী ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টকে (Indian Secular Front) না ছেড়ে নিজেরাই প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছে জোটের ‘বড় দাদা’রা। সেক্ষেত্রে নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্র মহাদেব ভুঁইয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। মহাদেববাবু নন্দীগ্রামে বেশ পরিচিত নাম। ওই এলাকায় বেশ কিছু পার্টি অফিস পুনরুদ্ধার করেছেন তিনি। এছাড়াও ভাবা হচ্ছে DYFI জেলা সম্পাদক পরিতোষ পট্টনায়েকের নাম। উঠে আসছে সিপিএমের যুবনেতা প্রীতম কয়ালের নামও। আবার রাজ্যস্তরে পরিচিত কোনও নামকেও দাঁড় করানো হতে পারে।
চিরাচরিতভাবে নন্দীগ্রাম (Nandigram) আসনটিতে প্রার্থী দেয় বাম শরিক সিপিআই। সেই ১৯৫২ থেকে নন্দীগ্রামে প্রার্থী দিয়ে আসছে তারা। একটা সময় এই নন্দীগ্রাম সিপিআইয়ের গড় হিসেবেও পরিচিত ছিল। ২০০৯ সালের উপনির্বাচনের আগে পর্যন্ত এই কেন্দ্র থেকে কখনও জেতেনি তৃণমূল। কিন্তু শেষ দুটি নির্বাচনে বামেরা গিয়ে ঠেকেছে তলানিতে। এবারে নন্দীগ্রামে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। প্রার্থী হয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির (BJP) তরফে আবার লড়ছেন সদ্য শাসক শিবির থেকে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী। যার জেরে নন্দীগ্রামই এখন রাজ্যের সবচেয়ে হেভিওয়েট কেন্দ্র। তাই এই কেন্দ্রে নিজেরাও হেভিওয়েট প্রার্থী দিতে চায় সংযুক্ত মোর্চা।
[আরও পড়ুন: ভোটের আগে দল ছাড়ার হিড়িক, তৃণমূলের হাতছাড়া মালদহ জেলা পরিষদ]
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু (Biman Bose) জানিয়েছেন, “নন্দীগ্রাম এবারের ভোটে হাই প্রোফাইল কেন্দ্র। এখান থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দাঁড়াচ্ছেন। বিজেপি শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতাকে প্রার্থী করেছে। আমরা জোটের তরফেও হেভিওয়েট প্রার্থী দেব। যার অন্তত রাজ্য স্তরে ভালো পরিচিতি আছে। তবে এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সময় নিচ্ছি আমরা।” আসলে বামেদের ধারণা, প্রথমবার ভোটের ময়দানে অবতীর্ণ হতে চলা আইএসএফের (ISF) পক্ষে এত হেভিওয়েট কেন্দ্রে লড়াই দেওয়া সম্ভব হবে না। তাছাড়া, ‘ভাইজান’ যদি এই কেন্দ্রে মুসলিম প্রার্থী দেন, তাহলে রাজ্যে বার্তা যাবে সংযুক্ত মোর্চা বিজেপির সুবিধা করে দিতে চাইছে। যা বামেদের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকারক হবে। সম্ভবত, সে কারণেই এই কেন্দ্রটি তাদের ছাড়া হচ্ছে না।
[আরও পড়ুন: আরও ভয়াবহ পূর্ব রেলের সদর দপ্তরের অগ্নিকাণ্ড, আগুনে ঝলসে অন্তত ৭ জনের মৃত্যু]
এবার প্রশ্ন হল, তাহলে সিপিআই (CPI) নয় কেন? আসলে সিপিএম চাইছে মুখ্যমন্ত্রী এবং শুভেন্দুকে কঠিন লড়াইয়ের মুখে ফেলতে। যা নিশ্চিত করতে যে লোক এবং অর্থবল প্রয়োজন সেটা এই মুহূর্তে বামেদের ছোট শরিকের নেই। তাই নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে প্রথমবার সিপিএম নিজেই প্রার্থী দিতে পারে।