বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: সীতারাম ইয়েচুরির প্রয়াণের ফলে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক পদ শূন্য। আপাতত কাজ চালানোর ভার পেলেন দলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। এ কে গোপালন ভবন সূত্রে খবর, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে কারাটকে সর্বসম্মতিক্রমে কেন্দ্রীয় কমিটি এবং পলিটবুরোর কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কারাটই এ কে গোপালন ভবন থেকে পলিটবুরোর বাকি সকলের সঙ্গে সমন্বয়ের কাজটি করবেন। অর্থাৎ বকলমে সিপিএমের নিয়ন্ত্রণ ফের চলে গেল কারাট লবির হাতেই।
আগামী বছর এপ্রিল-মে মাসে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস। সেখানেই পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার কথা। পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী একজন তিনবারের বেশি অর্থাৎ সর্বাধিক নয় বছর সাধারণ সম্পাদক থাকতে পারেন। আগামী বছর ইয়েচুরির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একবছর আগেই ইয়েচুরির মৃত্যু হওয়ায় দলের কাজ চালাতে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সেই সমস্যা মেটাতেই প্রকাশ কারাটকে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হল।
সিপিএমের অন্দরে জল্পনা ছিল, ইয়েচুরির শূন্যস্থানে পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন বৃন্দা কারাট। তবে আরও একজনের নামও পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে রয়েছে। তিনি হলেন কেরলের প্রাক্তন মন্ত্রী ও রাজ্যসভার প্রাক্তন সদস্য এম এ বেবি। তবে বেবির ক্ষেত্রে বাধা তার পরিচিতি। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তার পরিচিতি না থাকায় এগিয়ে রাখা হচ্ছে বৃন্দা কারাটকেই। শেষদিকে লড়াইয়ে ঢুকে গিয়েছিলেন মানিক সরকারও। সেসব জল্পনার মধ্যেই কারাট দায়িত্ব পেলেন।
উল্লেখ্য, এই কারাট যখন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তখনই পরমাণু চুক্তির বিরোধিতা করে ইউপিএ সরকারের থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে সিপিএম। কারাটের সেই সিদ্ধান্ত পরবর্তীকালে বিভিন্ন পর্যায়ে সমালোচিত হয়। আজ দেশজুড়ে সিপিএমের ক্ষয়িষ্ণু অবস্থার জন্যও অনেকে দায়ী করেন কারাটের সেই বিতর্কিত সিদ্ধান্তকেই। বস্তুত, কারাট বিজেপি এবং কংগ্রেস দুই দলের থেকেই সমান দূরত্ব বজায় রাখার পক্ষে। এখন দেখার আগামী দিনে সিপিএম এবং কংগ্রেসের সম্পর্ক কোন পথে এগোয়?