বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল আগেই। এবার তাতেই পড়ল সিলমোহর। তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় লেখার জেরে সাসপেন্ডই করা হল অনিলকন্যা অজন্তা বিশ্বাসকে (Ajanta Biswas)।
সিপিএমের (CPM) অঞ্চল কমিটির সদস্য হয়েও তৃণমূলের মুখপত্রে লেখার কারণে অজন্তাকে ঘিরে তৈরি হয় বিতর্ক। জেলা কমিটির কাছে প্রয়াত সিপিএম নেতা অনিল বিশ্বাসের মেয়েকে ৩ মাসের জন্য সাসপেনশনের প্রস্তাব দিয়েছিল এরিয়া কমিটি। আজই সে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল। আর সেই বৈঠকেই অজন্তা বিশ্বাসকে তিন মাস সাসপেন্ড করার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে রাজ্য কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে বিরোধিতার মুখে পড়ে বল আবার উচ্চতর নেতৃত্বের কোর্টে ঠেলে দেওয়া হয়। রাজ্য কমিটির শাস্তির মেয়াদ বাড়িয়ে ৬ মাসের জন্য অজন্তাকে সাসপেনশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত মাসেই তৃণমূলের (TMC) মুখপত্রের জন্য কলম ধরেছিলেন এক সময়ের দাপুটে বাম নেতা অনিল বিশ্বাসের (Anil Biswas) কন্যা অধ্যাপিকা অজন্তা বিশ্বাস। লেখার প্রথম কিস্তি প্রকাশের দিন থেকেই চর্চায় ছিলেন তিনি। তবে সকলের নজর ছিল ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ শীর্ষক উত্তর সম্পাদকীয়তে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সম্পর্কে কী লেখেন অনিলকন্যা? দেখা যায়, তৃণমূলনেত্রীর লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অজন্তা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘ইতিহাসের সেরা বাঙালি মহিলা রাজনীতিবিদ’ও বলেন তিনি। তাঁর কলমে উঠে আসে নন্দীগ্রামে তৃণমূল সুপ্রিমোর লড়াইয়ের কথাও। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
[আরও পড়ুন: Taliban Terror: দুই সন্তান-সহ আফগানিস্তানে গৃহবন্দি বেহালার মেয়ে, দেশে ফেরার কাতর আরজি]
শেষ কিস্তিটি প্রকাশের পর সিপিএমের এরিয়া কমিটির সদস্য অজন্তা বিশ্বাসকে শোকজ করে দল। সিপিএমের সদস্য হয়ে ‘জাগো বাংলা’য় এ ধরনের লেখা দলবিরোধী কাজ বলে চিহ্নিত করে শোকজের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। যদিও অজন্তা বিশ্বাসের দাবি ছিল, দলমত নির্বিশেষে বাংলার রাজনীতিতে মহিলাদের লড়াইয়ের কথা তুলে ধরতে চেয়েছিলেন তিনি। তাঁর এই জবাব মনঃপুত হয়নি সিপিএম নেতৃত্বের। তাই তাঁকে তিনমাসের জন্য সাসপেন্ড করার সুপারিশ করে দলের এরিয়া কমিটি। শনিবার তাতেই পড়ল সিলমোহর।
প্রসঙ্গত, এর আগে সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধেও এমনই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছিল সিপিএম। একটি ডিজিটাল পত্রিকায় ‘আপত্তিকর’ কথা লেখার অভিযোগে তিন মাসের জন্য দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল তাঁকে। লেখালেখির কারণে তিন মাসের সাজার খাঁড়া নেমে এসেছিল DYFI-এর প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস সিনহার ঘাড়েও। এবার একই শাস্তি হল অজন্তার।