shono
Advertisement
West Bengal Lok Sabha Polls

শহর-গ্রামে কোথাও বামে আস্থা নেই, ব‌্যর্থ তরুণ ব্রিগেডও, কারণ খুঁজতে বৈঠকে সিপিএম

রাজ‌্য কমিটির বৈঠকে আলোচনায় অন্যতম বিষয় হতে চলেছে, পার্টিতে তরুণ ব্রিগেডরাও কেন কোনও দাগ কাটতে পারল না ভোটযুদ্ধে।
Published By: Subhajit MandalPosted: 09:42 PM Jun 18, 2024Updated: 09:43 PM Jun 18, 2024

রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে দ্বিমুখী লড়াইয়ে সিপিএম কোনও দাগই কাটতে পারেনি। এই দ্বিমুখী লড়াইটা ভেঙে দেওয়ার লক্ষ‌্য ছিল সিপিএমের। কিন্তু বিজেপিকে হারাতে মানুষ সিপিএমকে গ্রহণই করেনি। বাম-কংগ্রেস জোটে আস্থা দেখায়নি মানুষ। লোকসভা ভোটে দলের খারাপ ফলের পর্যালোচনায় বুধবার থেকে শুরু হওয়া সিপিএমের দু’দিনের রাজ‌্য কমিটির বৈঠকের আগে বিভিন্ন জেলা থেকে আলিমুদ্দিনে আসা প্রাথমিক রিপোর্টে এমনটা উঠে এসেছে।

Advertisement

শহর কিংবা গ্রাম, কোথাও মানুষ বামপন্থীদের খুব একটা বেশি সমর্থন করেনি। শুধু তাই নয়, তৃণমূল সরকারের জনমুখী লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের বিরোধিতা করার খেসারতও সিপিএমকে দিতে হয়েছে। পার্টির একাংশ সোশ‌্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে এই প্রকল্পের শুরুতে বিরোধিতা করেছিল। একইসঙ্গে বুথস্তরে পার্টির সাংগঠনিক দুর্বলতা, কর্মীর অভাবও সামনে এসেছে। পাশাপাশি জাতীয়স্তরে বিজেপি বিরোধিতায় ইন্ডিয়া (INDIA) জোটে তৃণমূলের সঙ্গে শামিল, আবার বাংলায় নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অন্ধ তৃণমূল বিরোধিতা করা সিপিএমের এই দ্বিচারিতাও রাজনৈতিক সচেতন মানুষ ভালভাবে নেয়নি। পার্টির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও এই অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি রয়ে গিয়েছিল। আর এসবের মধ্যেই তরুণ প্রজন্মকে সামনে এনেও ঘুরে দাঁড়ানোর পরীক্ষা ডাহা ফেল করেছে। নতুন রণকৌশল কি হওয়া দরকার, নিচুতলায় সংগঠন মজবুত করা, মানুষের মন বুঝতে প্রচার কৌশলই বা কী হবে আগামী দিনে সেইসব বিষয় নিয়েও আলোচনা হবে বুধ ও বৃহস্পতিবার দু’দিন ধরে অনুষ্ঠিত সিপিএমের রাজ‌্য কমিটির বৈঠকে।

[আরও পড়ুন: খাবার নেই, জলও শেষ! বীরভূমের ২৮ পড়ুয়া আটকে ধস কবলিত সিকিমে]

মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে ‘ক্যাপ্টেন’ করে লোকসভা ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল সিপিএম। কিন্তু মিনাক্ষীর ডাকে দলের কর্মী-সমর্থকরা ব্রিগেড ভরালেও ভোট কেন বাড়ল না? তরুণ প্রজন্মকে সামনে এগিয়ে দেওয়ার পরও কেন আম জনতার মন পাওয়া গেল না? ভোট পরবর্তী পর্যালোচনায় নেমে এমন প্রশ্ন উঠে এসেছে সিপিএমের অভ্যন্তরে। দলের মহিলা মুখ হিসেবে যে যুব নেত্রীকে আলিমুদ্দিন আগামীদিনে তুলে ধরতে চাইছে তাহলে সেই মীনাক্ষী কি সাধারণ ভোটারদের মধ্যে কোনও প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ। কারণ, মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের বুথেও ভরাডুবি হয়েছে সিপিএমের। কুলটি বিধানসভা কেন্দ্রের ১৩ নম্বর বুথের ভোটার ডিওয়াইএফআইয়ের (DYFI) রাজ্য সম্পাদক। সেই বুথে সিপিএম ভোট পেয়েছে ৪৬টি, তৃনমূল পেয়েছে ২৩৬ ও বিজেপি পেয়েছে ৩৪৮টি ভোট। এখন সিপিএমের একাংশের প্রশ্ন, পার্টিতে ব্যক্তি মুখ করার রেওয়াজ নেই। কিন্তু অলিখিতভাবে সেই রেওয়াজ ভেঙে মীনাক্ষী কে লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে এ রাজ্যে সিপিএমের মুখ করেছিল আলিমুদ্দিন। দলের কট্টরপন্থীদের একাংশের প্রশ্ন, নিজের বুথে জিততে না পারলে তার জনপ্রিয়তা কোথায়? শুধুমাত্র দলের কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে জনপ্রিয় হলে তো হবে না। সাধারণ ভোটারদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে হবে। কিন্তু তার কোনও প্রমাণ লোকসভা ভোটে পাওয়া যায় নি। মূলত মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তরুণ ব্রিগেডকে সামনে এগিয়ে দিয়েও ভোট বিপর্যয় ঠেকাতে পারেনি আলিমুদ্দিন। সৃজন ভট্টাচার্য, দীপ্সিতা ধর, সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তরুণ প্রজন্মের প্রার্থীদের জমানত জব্দ হয়েছে।

[আরও পড়ুন; কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার দায় কার? মালগাড়ির মৃত চালকের বিরুদ্ধেই FIR]

রাজ‌্য কমিটির বৈঠকে আলোচনায় অন্যতম বিষয় হতে চলেছে, পার্টিতে তরুণ ব্রিগেডরাও কেন কোনও দাগ কাটতে পারল না ভোটযুদ্ধে। রাজ্য কমিটির বৈঠকের পরে নির্বাচনী বিপর্যয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা, কারণ অনুসন্ধান ও ঘুরে দাঁড়ানোর ওষুধ খুঁজতে ফের রাজ্য বর্ধিত অধিবেশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বঙ্গ সিপিএম (CPIM)। জুলাই কিংবা আগস্ট মাসে কোনও একটি জেলাতে হবে এই অধিবেশন। সূত্রের খবর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া কিংবা মেদিনীপুরে এই অধিবেশন বসতে পারে। গত নভেম্বরে হাওড়াতে বর্ধিত অধিবেশন করেছিল আলিমুদ্দিন। আবার চলতি বছরেই পূজোর মরশুম কাটলেই সিপিএমের শাখাস্তর থেকে সম্মেলন শুরু হয়ে যাবে। আগামী বছর রাজ্য সম্মেলনের পর হবে পার্টি কংগ্রেস। ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে বুথ পর্যন্ত সংগঠন কিভাবে চাঙ্গা করা সম্ভব সে বিষয়ে আলোচনা হবে আসন্ন বর্ধিত অধিবেশনে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে দ্বিমুখী লড়াইয়ে সিপিএম কোনও দাগই কাটতে পারেনি।
  • এই দ্বিমুখী লড়াইটা ভেঙে দেওয়ার লক্ষ‌্য ছিল সিপিএমের।
  • কিন্তু বিজেপিকে হারাতে মানুষ সিপিএমকে গ্রহণই করেনি।
Advertisement