সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: আমফানে (Amphan) ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য প্রাপ্তির দাবি পূরণ না হলে এবার জাতীয় সড়ক অবরোধের ডাক দিলেন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা, রায়দিঘির প্রাক্তন বিধায়ক কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ব্লক প্রশাসনকে কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বললেন, ”একুশ দিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কথামতো আমফানে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা টাকা না পেলে ১১৭ নং জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে দেব।”
শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফানে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বিভিন্ন এলাকায়। ইতিমধ্যেই জেলার সাগরদ্বীপ, রায়দিঘি, ফ্রেজারগঞ্জ-সহ বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, তৃণমূল ঘনিষ্ঠ দোতলা, তিনতলা বাড়ির মালিকদের অন্যায়ভাবে পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে ক্ষতিপূরণের টাকা। আর ঘূর্ণিঝড়ে যাঁদের মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে, তাঁদের অধিকাংশের নামই ক্ষতিপূরণের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়নি। এই অভিযোগে কয়েকদিন আগেই ভাঙচুর চালানো হয়েছে সাগরদ্বীপের ধসপাড়া-সুমতিনগর- ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে। কান ধরে অন্যায় স্বীকার করানো হয়েছে রায়দিঘির মথুরাপুর ২ নম্বর ব্লকের নন্দকুমারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যকে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরিতে একইরকম ভাবে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও।
[আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গে প্রবল বৃষ্টিতে নদীতে বাড়ছে জল, ডুবে মৃত্যু একজনের]
বৃহস্পতিবার সেসব অভিযোগকারীদের সঙ্গে নিয়ে নামখানা বিডিও অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন তিনি ব্লক প্রশাসনকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ”প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত সকলেই যেন ক্ষতিপূরণ পায়। দোতলা-তিনতলা বাড়ির মালিকরা তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ হলেই অন্যায়ভাবে ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়ে যাচ্ছেন। অথচ গরিব মানুষ যাঁদের আসলে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা তাঁরা কেন পাবেন না? এটা কিছুতেই মেনে নেব না।” তিনি আরও বলেন, ”মুখ্যমন্ত্রী সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন। সাতদিন সময়ও চেয়েছেন। তাঁকে বিশ্বাস করে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করছি। কিন্তু প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ওই সময়ের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা না পেলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই একুশ দিন পর আবার পথে নামব। অবরুদ্ধ করে দেব ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক।”
[আরও পড়ুন: আমফানের ত্রাণে দুর্নীতির অভিযোগ, তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হুগলি]
এদিন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিক্ষোভে গন্ডগোলের আশঙ্কা থাকায় এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছিল প্রচুর পুলিশ। যদিও অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে সিপিএম পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধেও ক্ষতিপূরণের তালিকা তৈরিতে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগে বুধবার মথুরাপুর ২ নম্বর ব্লকের সিপিএম পরিচালিত রাধাকান্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক সদস্যার স্বামী ও দুই সদস্যকে গ্রামবাসীরা একটি স্কুলে দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখেন বলে অভিযোগ। রায়দিঘি থানার পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। এ প্রসঙ্গে আজ সিপিএম নেতা কান্তি গাঙ্গুলি জানান, ওই পঞ্চায়েতে সর্বদলীয় বৈঠক করে তবেই ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তৃণমূল চক্রান্ত করে সিপিএম পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
The post ঘূর্ণিঝড়ে দুর্গতদের ক্ষতিপূরণের দাবি, এবার জাতীয় সড়ক অবরোধের হুঁশিয়ারি কান্তির appeared first on Sangbad Pratidin.