সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আসন্ন লোকসভায় ফের ধাক্কা সিপিএম-কংগ্রেস জোটে। রাজ্যে একলা চলো নীতি নিতে চলেছে সিপিএম। বৃহস্পতিবার রাজ্য কমিটির বৈঠকের পর এমনই ইঙ্গিত মিলছে। ২০১৪-এর লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ এবং রায়গঞ্জে সিপিএমের জেতা আসন কোনওভাবেই কংগ্রেসকে ছাড়াতে রাজি নয় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এনিয়ে আগেই কংগ্রেসকে জানিয়ে দিয়েছিল রাজ্য সিপিএম। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে এদিন আলিমুদ্দিনের সদর কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিল রাজ্য নেতৃত্ব। সেখান থেকেই ইঙ্গিত, রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ আসনের সঙ্গে সমঝোতা করতে নারাজ রাজ্য কমিটির সদস্যরা। প্রয়োজনে একাই ৪২ আসনে লড়তে পারে সিপিএম।
সমস্যা আসলে অন্যত্র। আসন্ন লোকসভায় রাজ্যে সিপিএম-কংগ্রেস হাত ধরাধরি করে তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রাথমিকভাবে একমত হয়েছিল। কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এনিয়ে সিলমোহর দিয়েছিল শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছিল, সিপিএম এবং কংগ্রেসের পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতেই লড়াই হবে। যেমন কংগ্রেসের জেতা আসনে প্রার্থী দেবে না সিপিএম, তেমনই সিপিএম যে যে আসনে জয় পেয়েছে গত লোকসভায়, তাতে প্রার্থী দেবে না কংগ্রেস। কিন্তু দিল্লিতে কংগ্রেস হাইকমান্ডের সঙ্গে বৈঠকে অন্য কথা উঠে এসেছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র যুক্তি দিয়ে জানিয়েছিলেন, রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ আসনে কংগ্রেসের জয়ের সম্ভাবনা সবচেযে বেশি। তাই ওই দুটি আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী প্রয়োজন। এমনকী রায়গঞ্জ আসনে মহম্মদ সেলিমের বদলে দীপা দাশমুন্সিকে প্রার্থী করার প্রস্তাব দিয়ে এসেছেন সোমেন মিত্ররা। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেসের এই প্রস্তাব মানতে নারাজ রাজ্য সিপিএম। দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি মনে করেন, জেতা আসনে দলের প্রার্থীরা লড়তে না পারলে, তাঁদের মনোবল আরও ভেঙে যাবে। এদিকে, রায়গঞ্জের সাংসদ মহম্মদ সেলিমের অভিযোগ, তাঁকে ফের সংসদে যেতে বাধা দেওয়ার জন্যই এমন প্রস্তাবের বলছে কংগ্রেস। এতেই স্পষ্ট, তিনি ফের নিজের জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত। তবে মুর্শিদাবাদের সাংসদ বদরুদ্দোজা খান এবিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। ওই আসনে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি আবু হেনাকে প্রার্থী করতে চান সোমেন মিত্ররা।
এসবের জেরেই রাজ্যে বামপন্থী এবং দক্ষিণপন্থী দলের রাজনৈতিক সমঝোতায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজ্য কমিটির বৈঠকের পর রাজ্য নেতৃত্ব মনে করছে, একলা চলাই ভাল। সেক্ষেত্রে হয়তো ৪২টি আসনে এককভাবে লড়াই করতে পারে সিপিএম। ফলে চতুর্মুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা।