দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: একের পর এক সিপিএম কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর। লাগিয়ে দেওয়া হয় আগুন। বেধড়ক মারধর করা হয় মহিলাদের। অত্যাচার থেকে রেহাই পায়নি শিশুরাও। জয়নগরে তৃণমূল নেতা খুনে ফিরল বগটুই স্মৃতি। সেখানকার তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ খুনের পর কার্যত জতুগৃহের চেহারা নিয়েছিল বগটুই। প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত ১০ জন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার দলুয়াখাঁকিতে যেন সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি। আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা।
ভোর পাঁচটা নাগাদ নমাজ পড়তে বেরিয়ে খুন হন তৃণমূল নেতা সইফউদ্দিন লস্কর। তার ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে উন্মত্ত জনতার মারে মৃত্যু হয় নেতা খুনে অভিযুক্তের। মৃত তৃণমূল নেতার বাবা সিপিএমের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। আর তার পরই ঘটনাস্থল থেকে ৫ কিলোমিটার দূরের দলুয়াখাঁকি গ্রামে শুরু হয় তাণ্ডব। ওই গ্রামে বসবাসকারী সিপিএম নেতা-কর্মীদের দাবি, একের পর এক বাড়িতে চলে দেদার লুটপাট, ভাঙচুর। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় ঘরে। ধানের গোলাও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। মহিলাদের বেপরোয়াভাবে চলে মারধর। এক মহিলার পা ভেঙে যায়। এমনকী রেহাই পায়নি শিশুরাও। একটি শিশুকে পুকুরে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: তৃণমূল নেতার ‘খুনি’কে পিটিয়ে মারল জনতা, জোড়া খুনে জ্বলছে জয়নগর]
স্থানীয়দের দাবি, অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পর দমকল গ্রামে পৌঁছনোর চেষ্টা করে। তবে দমকল কর্মীদের বাধা দেওয়া হয়। দলুয়াখাঁকি গ্রাম থেকে জয়নগর থানার দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। তা সত্ত্বেও লুটপাট, ভাঙচুর, অগ্নিকাণ্ডের সময় পুলিশের দেখা পাওয়া যায়নি বলেই বিস্ফোরক দাবি সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের। স্থানীয়দের দাবি, তাণ্ডবের প্রায় ঘণ্টাচারেক পর সাড়ে ১১টা নাগাদ এলাকায় দেখা মেলে পুলিশের। তারও প্রায় আধঘণ্টা পর অর্থাৎ দুপুর ১২টা নাগাদ গ্রামে পৌঁছয় দমকল। তবে ততক্ষণে সব পুড়ে ছাই। প্রায় নিঃস্ব এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তৃণমূলই তাণ্ডব চালিয়েছে। যদিও সে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে রাজ্যের শাসক শিবির। তাদের দাবি, সইফউদ্দিন একজন জনদরদী নেতা ছিলেন। সকলকে নিয়ে কাজ করতেন। তাই তাঁর মৃত্যু মানতে পারেননি কেউ। সে কারণে স্থানীয় বাসিন্দারাই ক্ষোভে এই কাজ করেছেন। ঘটনাস্থলে ইতিমধ্যে পৌঁছেছেন পুলিশ সুপার পলাশ ঢালি। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে বলেই দাবি তাঁর।
দেখুন ভিডিও: