শঙ্কর ভট্টাচার্য: কেরলে বামেরা কত আসন পাবে এবার-এই প্রশ্নেই উদ্বেগে সিপিএম। দলের রাজ্য কমিটি এবং রাজ্য সম্পাকদকণ্ডলীর অভ্যন্তরীণ রিপোর্টের হিসাব, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ছ’টি আসনে তাদের জয় নিশ্চিত। বাকি আসনেও জোর লড়াই হবে। কিন্তু বামেদের এই হিসাব মানছে না কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মুল্লাপল্লি রামচন্দ্রনের সাফ কথা, এবার বামেরা একটা বড় শূন্য পাবে। সারা দেশ থেকে একটি আসনও মিলবে না সিপিএম-সহ বামেদের। ইতিমধ্যেই একাধিক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সমীক্ষা করে জানিয়েছে, এবার নাকি ২০ আসনে বামেদের জুটবে মাত্র চারটি। তারপর থেকেই দুই পক্ষ তেড়েফুঁড়ে প্রচারে নেমে পড়েছে। বামেরা বলছে সব ঝুট হ্যায়। মিলবে না হিসাব। আর কংগ্রেস বলছে, ওরা তো কমিয়ে বলছে, হাতচিহ্ন এবার ২০-তে ২০ পাবে।
[পুলওয়ামার অপরাধী মাসুদ আজহারকে ‘জি’ বলে সম্বোধন, ফের বিতর্কে রাহুল]
পশ্চিমবঙ্গে ভোটের উত্তাপ তেমন বোঝা না গেলেও কিন্তু কেরলে প্রচার কার্যত শুরু হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস, সিপিএম এবং বিজেপি রাজ্যব্যাপী প্রচারযাত্রা শেষ করে ফেলেছে। গত লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম মোট ৯টি আসন পেয়েছিল। তার মধ্যে কেরলে পাঁচ, ত্রিপুরা আর বাংলা থেকে দু’টি করে আসন মিলেছিল। গতবারের এই ন’টি আসন কি বাড়বে? রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, বাংলা আর ত্রিপুরা থেকে খালি হাতেই ফিরতে হবে বামেদের। ভরসা কেবল কেরল। সেখানেও সবরীমালা থেকে বন্যা, বিভিন্ন ইস্যুতে এখন সমর্থন তলানিতে। ফলে এই ভোটে হয়তো সব থেকে খারাপ ফল করতে চলেছেন বামেরা। এদিকে গত সপ্তাহের মঙ্গল এবং বুধবার বসেছিল সিপিএমের রাজ্য কমিটি এবং সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক। ওই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের হাত ধরা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। প্রকাশ কারাটপন্থীরা এই রাজ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ। ফলে বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে মাখামাখির চেষ্টার বিরোধিতা করা হয়। কিন্তু দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সবুজ সংকেতের পর এই নিয়ে তাঁদের বিশেষ কিছু করার নেই বলে বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালকৃষ্ণন।
[রমজানের মধ্যে ভোটের নির্ঘণ্ট নিয়ে বিতর্ক, জবাব দিল নির্বাচন কমিশন]
তিরুবনন্তপুরম কেন্দ্রে এবার শশী থারুরের বিরুদ্ধে লড়ছেন সিপিআই নেতা সি দিবাকরণ। কেরলের প্রাক্তন মন্ত্রী, এআইটিইউসির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদককে দাঁড় করানোর ফলে এই স্টার কেন্দ্রে ভাল লড়াই হবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, বিজেপির পক্ষ থেকে নাগাল্যান্ডের প্রাক্তন রাজ্যপাল কুম্মানাম রাজশেখরন দাঁড়াচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে দিল্লি থেকে। সিপিএমের হিসাব, এবার কাসারগোড়, কান্নুর, পালাক্কাড, আলাপ্পুঝা, ত্রিচূড় আর চালাক্কুডি আসন নিশ্চিত। তবে দুই দলেরই নজর বিজেপির ভোট কাটাকাটির দিকে। এবার বিজেপি বেশি ভোট পেলে লাভ কংগ্রেসের। কারণ হিন্দু ভোটের উপর নির্ভর করে সিপিএম-সহ বামেরা। সেই ভোট ভাগের আশায় কেরলের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। তবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মুল্লাপল্লি রামচন্দ্রনের সঙ্গে কথা হল এর্নাকুলামে। দলীয় সভার পরে ‘সংবাদ প্রতিদিন’কে দেওয়া এক একাংশ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,“আমরা নিজেদের জোরেই এবার ২০ আসনে জিততে চলেছি। রাজ্যের মানুষ বামেদের অপশাসনে বীতশ্রদ্ধ। বন্যায় সরকারের ভূমিকা সকলেই দেখেছেন। তারপর সবরীমালা। সব মিলিয়ে ১৯৮০-র মতো সব আসনে জিতব।” উলটোদিকে রাজ্য বাম ও গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের প্রাক্তন আহ্বায়ক তথা কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ভাইকম বিশ্বন বলেন, এবার বামেদের পক্ষেই হাওয়া। সংখ্যালঘু এবং সংখ্যাগুরু, সব ভোটই আমরা পাব।” এই চাপানউতোর আরও তীব্র হতে চলেছে আগামিদিনে।
The post কুড়িতে মাত্র ছয় আসন! অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় উদ্বেগ কেরল সিপিএমেরও appeared first on Sangbad Pratidin.