রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: পঞ্চায়েত ভোটে সব বুথে প্রার্থী না পাওয়ার আশঙ্কায় পার্টিতে ‘ঝাড়াই-বাছাই’ আপাতত বন্ধ রাখছে সিপিএম (CPIM)। ভোটের আগে মেদহীন সংগঠন গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেও কিছুটা পিছু হঠতে হল আলিমুদ্দিনকে। দলের নিষ্ক্রিয় সদস্যদের সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েও কার্যত উভয় সংকটে এখন বঙ্গ সিপিএম। দলের একাংশ চাইছে, নিষ্ক্রিয়দের একেবারে সরিয়ে তরুণ প্রজন্মে প্রাধান্য দিয়ে একেবারে মেদহীন সংগঠন গড়ে তোলা হোক। আবার দলের অন্য অংশের বক্তব্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নিষ্ক্রিয়দের দল থেকে সরিয়ে দিলে তা শাঁখের করাত হতে পারে পার্টির কাছে। বেশ কিছু জেলা থেকেও এখনই নিষ্ক্রিয়দের সরানোর বিপক্ষে রিপোর্ট গিয়েছে আলিমুদ্দিনে।
কারণ, দল থেকে নিষ্ক্রিয়দের ছাঁটাই করলে তাদের ক্ষোভকে হাতিয়ার করতে পারে বিপক্ষ। আলিমুদ্দিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, পঞ্চায়েত ভোটের আগেই সংগঠনকে পুরোপুরি সক্রিয় করে তুলতে হবে। সেই মতো নিষ্ক্রিয়দের তালিকা তৈরির কাজ শুরুও করে দেওয়া হয়। রাজ্যে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার সময় অর্থাৎ ২০১১ সালে সিপিএমের নিষ্ক্রিয় সদস্যের সংখ্যা ছিল ১৩ শতাংশের মতো। ২০১৬ সালে তা বেড়ে হয় ১৭ শতাংশের বেশি। তবে শুধু পার্টি সদস্যরাই নন, বহু সাধারণ কর্মীই নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছেন।
[আরও পড়ুন: হামলার আশঙ্কা, মুকেশ আম্বানিকে জেড প্লাস নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের]
কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই নিষ্ক্রিয়দের ছাঁটাই করতে গিয়েও পিছিয়ে আসতে হল আলিমুদ্দিনকে। পার্টির একাংশের এও আশঙ্কা, এক, এখনও বহু বুথে সংগঠন ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। তাই নিষ্ক্রিয়দের সরিয়ে দিলে ভোটটাও হাতছাড়া হতে পারে। দুই, ছাঁটাই করলে অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে বিজেপিতেও (BJP) চলে যেতে পারে। কারণ, নিচুতলায় বিজেপির সঙ্গে পার্টি কর্মীদের একাংশের সমঝোতা করে চলার একটা প্রবণতা দেখা গিয়েছে। হুগলিতেই দু’টি ঘটনা তার প্রমাণ। গেরুয়া কর্মসূচিতে লাল ঝান্ডা হাতে দেখা গিয়েছে সিপিএম কর্মীদেরও। আবার কয়েকটি সমবায় নির্বাচনে রাম-বাম সমঝোতা প্রকাশ্যে এসেছে।
[আরও পড়ুন: ফের সুখবর কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের জন্য, দোলের আগেই আরও বাড়তে পারে DA, DR, বেতন!]
পঞ্চায়েত ভোটে নিচুতলায় বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করলে ইতিমধ্যেই দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তাও দিয়েছে সিপিএম। কিন্তু সেই বার্তার পরও তৃণমূলকে (TMC) ঠেকাতে নিচুতলায় বিজেপির হাত ধরতেই আগ্রহী স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একটা বড় অংশ। যা নিয়ে অবশ্য সিঁদুরে মেঘ দেখছে আলিমুদ্দিন। তাই এখনই পার্টির নিষ্ক্রিয়দের ছাঁটাই করলে তারা বিজেপিতে চলে যেতে পারে। কাজেই নিষ্ক্রিয় ছাঁটাই অভিযান পঞ্চায়েত ভোটের আগে স্থগিত করে দিল আলিমুদ্দিন (Alimuddin)।