রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: পার্টি সদস্যদের ত্রুটি সংশোধন করতে ব্যক্তিগত মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করেছে আলিমুদ্দিন। আর তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। ব্যক্তিগত মূল্যায়ন করতে গিয়ে আলিমুদ্দিনের দেওয়া প্রশ্নপত্রে সংশ্লিষ্ট পার্টি সদস্যের উত্তরের সত্যতা কতটা সেটা দেখার দায়িত্ব কার? এটা নিয়ে প্রশ্ন রাজ্য সিপিএমের (CPM) মধ্যেই।
ব্যক্তিগত মূল্যায়ন করতে গিয়ে সত্য লুকোলেও, তা শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষে জানা সম্ভব নয় বলেই মনে করছে দলের একাংশ। ফলে এই ব্যক্তিগত মূল্যায়ন পর্ব কতটা কার্যকরী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। আবার একাংশের প্রশ্ন, পার্টির নীতি—আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়া এরকম কমরেডরা শীর্ষ নেতাদের কাছের লোক হলে তার সাত খুন মাফ হয়ে যায়। সম্প্রতি সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষের বিলাসবহুল গাড়ি কেনা নিয়েও বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। বঙ্গ সিপিএম অবশ্য শতরূপের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। উলটে আলিমুদ্দিনে বসেই যুক্তি সাজিয়ে যাঁরা তাঁরা এই বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁদের ব্যক্তিগত ও কুরুচিকর আক্রমণ করেছিলেন। পার্টির একাংশের কথায়, শীর্ষ নেতত্বের স্নেহধন্য হওয়াতেই শতরূপের কোনও দোষ দেখতে পায়নি আলিমুদ্দিন। এটা নিয়ে দলের মধ্যে নিচুতলায় প্রশ্নও তুলেছিলেন কমরেডরা।
[আরও পড়ুন: ‘আবর্জনার’ মূল্য চন্দ্রযানের বাজেটের সমান! বাতিল কাগজ বিক্রিতেই ৬০০ কোটি আয় কেন্দ্রের]
পার্টির বিভিন্ন জেলা কমিটির তরফে যে ত্রুটি সংশোধন অভিযান সংক্রান্ত যে ব্যক্তিগত মূল্যায়ন প্রোফর্মা দেওয়া হয়েছে, তাতে একাধিক প্রশ্ন রাখা হয়েছে সদস্যদের কাছে। প্রথমত ১ এর (ক) প্রশ্নে জানতে চাওয়া হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট পার্টি সদস্যের উপর কী কী দায়িত্ব রয়েছে। (খ) এর প্রশ্ন, সফলভাবে সেই দায়িত্ব পালন করতে পারছেন কি না সেই পার্টি সদস্য। এছাড়াও প্রশ্নমালায় আছে, পার্টি সদস্যদের নূন্যতম পাঁচটি কাজ সংশ্লিষ্ট সদস্য পালন করছেন কি না। আবার জিজ্ঞেস করা হয়েছে, জনজীবনে ও পারিবারিক জীবনে কমিউনিস্ট মূল্যবোধ অনুযায়ী চলতে সফল কি না সেই পার্টি সদস্য।
[আরও পড়ুন: বুধবার সমন্বয় কমিটির বৈঠকে নেই অভিষেক, পাশে INDIA]
এছাড়া, পারিবারিক ধর্মীয় আচার ও অভ্যাস থেকে মুক্ত থাকতে কতটা সক্ষম হয়েছেন? এছাড়া, বিবাহ ও অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে বিলাসবহুল ব্যয় বর্জন নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এই ধর্মীয় ও বিলাসবহুল জীবনযাপন নিয়ে অবশ্য বিতর্ক আগেও হয়েছে। এছাড়া, নেতারা কতটা পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা পরিবর্তন করতে পেরেছেন তাও জানতে চেয়েছে দল। তবে একটাই প্রশ্ন, দল দীর্ঘদিন ক্ষমতার অলিন্দে নেই। পার্টির দুঃসময় চলছে। নির্বাচনেও সাফল্য নেই। তখন পার্টি সদস্যদের ত্রুটি সংশোধন করতে গিয়ে ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে না তো? তবে সবদিক দেখে সতর্ক থেকেই অবশ্য অভিযান চালাচ্ছে আলিমুদ্দিন।