সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোর্টের এক প্রান্তে নারী। অন্য প্রান্তে পুরুষ। অভিনব এই লড়াই টেনিসবিশ্বে পরিচিত 'ব্যাটেল অফ সেক্সেস' (Battle of the Sexes) নামে। লিঙ্গবৈষম্য ভুলে অভিনব এই টেনিসযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্বে মুখোমুখি হয়েছিলেন আরিয়ানা সাবালেঙ্কা এবং নিক কিরিয়স। আর ঐতিহাসিক এই ম্যাচের ধারাভাষ্য দিলেন ভারতীয় 'টেনিস ক্যুইন' সানিয়া মির্জা। সেখানে হার মানলেন বিশ্বের শীর্ষ মহিলা তারকা।
কেন অভিনব ছিল এই ম্যাচ? আয়োজকরা নানা পরীক্ষানিরীক্ষার পর জানিয়েছিলেন, কোর্টে মুভমেন্টের ক্ষেত্রে পুরুষদের থেকে নারীরা ৯ শতাংশ ধীর গতির। তাহলে তো যুক্তির হিসাবে ম্যাচ হয়ে যাবে 'অসম'। এর উপায়ও অবশ্য ঠিক করেন আয়োজকরা। কিরিয়সের মতো সার্ভ নির্ভর খেলোয়াড় যাতে বাড়তি সুবিধা না পেয়ে যান, সেই কারণে সাবালেঙ্কার কোর্ট প্রতিপক্ষের থেকে ৯ শতাংশ ছোট করে দেওয়া হয়। অর্থাৎ দুই খেলোয়াড়ের জন্য দু'টি কোর্ট হয়েছিল আলাদা।
এমন একটি অভিনব ম্যাচে নামার আগে দুই প্রতিপক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে তর্জনগর্জন করেছিলেন। মহিলাদের শীর্ষ তারকা বিনা যুদ্ধে সূচ্যগ্র মেদিনী না দেওয়ার পণ করে বলেছিলেন, "কিরিয়সকে একচুলও জমি ছাড়ব না।" অজি তারকাই বা চুপ থাকবেন কেন? "আমি ১০০ শতাংশ দিলে ও আমাকে হারাতে পারবে না।" বলে দেন কিরিয়সও। ম্যাচটিতে দুই তারকার জন্য আলাদা আলাদা কোর্ট তো বটেই। আরও কিছু নিয়মের বদল হয়েছিল। বলা হয়েছিল, তিন সেটের ম্যাচ হবে। প্রথম দুই সেটের পর ফলাফল ১-১ থাকলে টাইব্রেকার হবে ১০ পয়েন্টের। সেখানেই হবে ফয়সালা।
ম্যাচে অবশ্য সেসবের প্রয়োজন হয়নি। কারণ একেবারে ৩-৬, ৩-৬ স্ট্রেট সেটে হার মানেন সাবালেঙ্কা। তবে দমে যেতে নারাজ বেলারুশিয়ান তারকা। তিনি বলেন, "আমি প্রতিশোধ নিতে ভালোবাসি। আবারও চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরি। তাই আবারও খেলতে চাই। খুবই উপভোগ্য একটা ম্যাচ হয়েছে। জোরদার লড়াই করেছি। অনেক ভালো শট মেরেছি। কিছু ভালো ড্রপ শটও খেলেছি। নিক সত্যিই ভালো সার্ভ করেছে। তবে পরেরবার ওকে হারাব। কারণ আমি ওর শক্তি-দুর্বলতাগুলো জানি। নিশ্চিতভাবে আরও ভালো ম্যাচ হতে চলেছে।"
২০২২ সালে উইম্বলডন ফাইনালে পৌঁছনো কিরিয়স বলেন, "এটা সত্যিই কঠিন একটা ম্যাচ ছিল। সাবালেঙ্কা অনবদ্য খেলোয়াড়। একজন চ্যাম্পিয়ন। একাধিক গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছে। ও আমার সার্ভ অনেকবার ভেঙেছে। এখানে খেলাটা দুর্দান্ত একটা সুযোগ ছিল।" উল্লেখ্য, এই ধরনের প্রতিযোগিতা এই প্রথম নয়। ১৯৭৩ সালে এমনই একটা ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই লড়াই বিখ্যাত হয়ে আছে 'ব্যাটেল অফ সেক্সেস' নামে। সেই সময় বিশ্বের দু'নম্বর মহিলা তারকা বিলি জিন কিং হারিয়েছিলেন ববি রিগসকে। সাবালেঙ্কা-কিরিয়সের ম্যাচকে সেই কারণেই বলা হচ্ছিল 'ব্যাটেল অফ সেক্সেস'-এর দ্বিতীয় পর্ব।
