স্টাফ রিপোর্টার: এ যেন আক্ষরিক অর্থেই ‘নানা মুনির নানা মত!’ কেউ বলছেন, ব্যাকফুটে যেতে বাধ্য কর শরীর লক্ষ্য করে বল করে। কারও মতে, আর যাই কর ওকে নিজের মতোই থাকতে দাও। আবার কেউ শোনাচ্ছেন অসম্ভব সম্মান করার কথা! বর্ডার-গাভাসকর ট্রফির আগে বিরাট কোহলিকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের মধ্যে থেকেই উঠে আসছে পরস্পরবিরোধী সব পরামর্শ।
ইয়ান হিলি যেমন। প্রাক্তন উইকেটকিপার-ব্যাটারের দাওয়াই, শর্ট পিচ বোলিংয়ে বিরাটকে চমকে দিক অজি বোলিং। বলছিলেন, “আমাদের পেসাররা বিরাটের বিরুদ্ধে কেমন বল করে, সেদিকে তাকিয়ে আছি। ফ্রন্টফুটে এসে ও যে কোনও ধরণের শট খেলতে পারে।” প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজেলউডদের প্রতি তাঁর বার্তা, “বিরাটের দুর্বলতা খুঁজে বের করে কাজে লাগাতে হবে। প্রয়োজনে ওর ফ্রন্ট প্যাড লক্ষ্য করে বল করতে হবে। তবে প্রতিটা বল এভাবে করলে হবে না। সেক্ষেত্রে বিরাট মানিয়ে নেবে পরিস্থিতির সঙ্গে। মাঝে মাঝে এমন ডেলিভারিতে ওকে চমকে দিতে হবে।” আর যদি এই পরিকল্পনা কার্যকর না হয়, তবে বিকল্প কী করতে হবে তাও বলে দিয়েছেন হিলি। এই কিংবদন্তির মতে, “যদি ফ্রন্ট ফুট বোলিংয়ে কাজ না হয়, তবে সোজা বিরাটের শরীর লক্ষ্য করে বল করতে হবে। সেটা অবশ্য বেশ উত্তেজক হবে। কারণ এমন বোলিং সামলানোর জন্য ওকে অনেক বেশি নড়াচড়া করতে হবে। সঙ্গে শর্ট লেগে ফিল্ডার রাখ। চাইলে একটা বাম্পারও রাখতে পার। বিরাট হয়তো হুক বা পুল করে রান তুলতে চাইবে। সেই শটে একটু ত্রুটি হলেই সাফল্য পাবে অস্ট্রেলিয়া।”
এমনিতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বিরাটের সাফল্য ঈর্ষণীয়। চার সফরে মোট ১৩ টেস্টে ১,৩৫২ রান করেছেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক, ৫৪.০৮ গড়ে। পঞ্চম সফরের আগে অবশ্য বিশেষ ফর্মে নেই তিনি, শেষ ৬০ ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন মাত্র দু’বার। তবে বিরাটই যে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের প্রধান স্তম্ভ, অজানা নয় অজিদের। তাই তাঁকে নিষ্ক্রিয় রাখাই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ স্টার্ক-কামিন্সদের। শেন ওয়াটসনের মতও আলাদা নয়। তবে প্রাক্তন অজি অলরাউন্ডার অন্য পরামর্শ দিয়েছেন বর্তমান দলকে। আইপিএলে একসঙ্গে খেলার সুবাদে বিরাটকে একটু বেশি ভালোভাবেই চেনেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে তাঁর পরামর্শ, “বিরাটের ব্যাটিং দলের মানসিকতাটাই বদলে দেয়। তাই কোনওভাবেই ওকে উত্তেজিত করা চলবে না। আমরা জানি অস্ট্রেলিয়ায় বিরাট কতটা সফল। তাই ওকে ওর মতো থাকতে দিলেই ভালো হবে। আশা করছি অস্ট্রেলিয়ায় সাম্প্রতিক ফর্মের বিরাটকেই দেখা যাবে।”
পেস ব্রিগেডের পাশাপাশি আরও একজনের উপরে বিরাটকে ঠেকানোর গুরুদায়িত্ব থাকবে আসন্ন সিরিজে। সেই নাথান লিয় আবার ভারতীয় ব্যাটারের প্রসঙ্গে বলে দিয়েছেন, “সাম্প্রতিক ফর্ম খারাপ হলেও বিরাটের মতো চ্যাম্পিয়নকে কখনোই উপেক্ষা করা যায় না। ওকে আমি শ্রদ্ধা করি। আমি অবশ্যই দ্রুত বিরাটকে আউট করতে চাই। কিন্তু সে কাজটা মোটেই সহজ হবে না। সত্যি বলতে, বিরাট আর স্মিথই এই প্রজন্মের সেরা দুই ব্যাটার।” ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের কাছে ধবলধোলাই হলেও ভারতকে নিয়ে সতর্ক থাকছেন অজি স্পিনার।