সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র ছমাসের ব্যবধান। কীভাবে পৃথিবীটা বদলে গেল রোহিত শর্মার। চলতি বছরের জুন মাসে ভারতকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন অধিনায়ক রোহিত। আর বছর শেষে বর্ডার গাভাসকর ট্রফিতে প্রবল সমালোচনার মুখে তাঁর নেতৃত্ব। ব্যাটেও দুরবস্থা অব্যাহত। এখনই অবসর নেওয়া উচিত তাঁর, সোশাল মিডিয়ার গর্জন ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। প্রাক্তন ক্রিকেটাররাও রোহিতের ব্যাটিং ও নেতৃত্বকে ছিন্নভিন্ন করছেন।
পারথ টেস্টে বুমরাহর নেতৃত্বে জয় পেয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। তারপর পিতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে অধিনায়কত্বের দায়িত্বে এসেছিলেন রোহিত। কিন্তু অ্যাডিলেডে হার, ব্রিসবেনে কোনও রকমে ড্র। এবার মেলবোর্নেও চাপে টিম ইন্ডিয়া। এর সঙ্গে জুড়ছে ব্যাট হাতে রোহিতের বেহাল দশা। প্রথমে তিনি রাহুলকে ওপেনিংয়ের জায়গা ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু এই টেস্টে আবার পুরনো জায়গায় ফিরে এসেছেন। তাতে কাজের কাজ হয়নি। মেলবোর্নে করেছেন মাত্র ৩ রানে। আর এখনও পর্যন্ত এই সিরিজে তাঁর মোট রান মাত্র ২২।
রোহিতের শেষ টেস্ট সেঞ্চুরি এসেছে চলতি বছরের মার্চ মাসে, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। তার পর অক্টোবরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটা হাফসেঞ্চুরি। এদিকে বছর ফুরোতে যায়। শেষের শুরু কি ঘনিয়ে এসেছে রোহিতের? এবার কি রজত পাতিদার, ঋতুরাজ গায়কোয়াড়দের মতো তরুণদের জন্য এবার জায়গা ছেড়ে দেওয়া উচিত? অনেকের মতে সম্মানের সঙ্গে এখনই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় নেওয়া উচিত। ঠিক যেমন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষে করেছেন।
মার্ক ওয়া তো বলেই দিলেন, "পরের তিনটি ইনিংসে রোহিত যদি ভালো কিছু না করে দেখাতে পারে, তাহলে আমি নিশ্চিত ওর কেরিয়ার শেষ।" এতটা সোজা-সাপটা না হলেও সুনীল গাভাসকর, রবি শাস্ত্রীরা ধরিয়ে দিচ্ছেন রোহিতের নেতৃত্বের ভুল। যদি দুই স্পিনারেই খেলা হবে, তাহলে ওয়াশিংটন সুন্দর এত দেরিতে আসবেন কেন? প্রশ্ন শাস্ত্রীর। অন্যদিকে গাভাসকরের বক্তব্য, বোলিং অত্যন্ত সাদামাটা হয়েছে। কখন বাউন্সার মারতে হবে, সেটা ঠিকই করতে পারেননি ভারত অধিনায়ক। কেন শুভমান গিল বসলেন, কেন খারাপ পারফরম্যান্স সত্ত্বেও মহম্মদ সিরাজ খেলে চলেছেন এসব তো আছেই। প্রাক্তন নির্বাচক এমএসকে প্রসাদ রোহিতের নেতৃত্বকে 'জঘন্য' বলতেও ছাড়েননি।
এর মধ্যে শোনা যাচ্ছে বর্তমান প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকর রোহিতের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। সেটা যে রোহিতের ভবিষ্যৎ সংক্রান্ত, সেরকমও অনুমান করছেন অনেকে। তাহলে কি বর্ডার গাভাসকর ট্রফিতেই বিদায় নিশ্চিত রোহিতের? কারণ এখানে সিরিজ হারলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল খেলার আর কোনও সুযোগ থাকবে না। সেক্ষেত্রে ভারত পরের টেস্ট খেলবে আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। ততদিনে কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও হয়ে যাবে। কদিন আগেই অবসর নিয়েছেন অশ্বিন। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত খেলার নজির তো শচীনের আছে। কিন্তু নির্বাচকরা কি এতদিন অপেক্ষা করবেন রোহিতের টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য? উত্তরটা আপাতত সময়ের গর্ভে।