স্টাফ রিপোর্টার: এমসিজিতে অ্যাশেজের বক্সিং ডে টেস্ট মাত্র দু’দিনে শেষ হয়ে যাওয়া নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় পড়ে গিয়েছে ক্রিকেটবিশ্ব জুড়ে। ক্রিকেট মহল। বিশেষজ্ঞকুল। আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যম। সর্বত্র সমালোচিত হচ্ছে এমসিজি বাইশ গজ। আবারও বলে রাখা যাক, এমসিজিতে অ্যাশেজের চতুর্থ টেস্ট টিকেছিল মাত্র দু’দিন। প্রথম দিন কুড়িটা উইকেট পড়ে। দ্বিতীয় দিন আবার টেস্টই জিতে যায় ইংল্যান্ড! যার পর ঐতিহ্যের এমসিজি রোষানলে পড়ে গেল গ্রেগ চ্যাপেলেরও।
মঙ্গলবার এক ওয়েবসাইটে গুরু গ্রেগ লিখেছেন, ‘এমসিজিতে কী ম্যাচটাই না হওয়ার কথা ছিল! কিন্তু তার বদলে একরাশ লজ্জা উপহার দিল বিশ্বের অন্যতম ঐতিহ্যশালী মাঠ। অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মতো দু’টো টেস্ট খেলিয়ে দেশের মধ্যে কি না ম্যাচ টেনেটুনে চলল দু’দিন! পিচ কিউরেটর ম্যাট শিল্ড যে বাইশ গজ তৈরি করেছে, তা কোনওভাবেই আদর্শ নয়। পিচে আর্দ্রতা ছিল। বাউন্স-সিম আন্দাজ করা যাচ্ছিল না। গাছের পাতা যেমন ঝরে পড়ে, সেভাবে উইকেট পড়ছিল। একটা উইকেট পড়লে, পিছু পিছু আরও গোটা কয়েক পড়ে যাচ্ছিল। সম্মিলিত রান একশো পার করতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছিল দু’টো টিম। নব্বই হাজার দর্শক এসেছিলেন এমসিজিতে। অ্যাশেজ দেখতে। তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।’
এখানেই থামেননি প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক। রাগে গরগর করতে করতে তিনি ফের লিখেছেন, ‘তবে শুধুমাত্র এমসিজি পিচের আচরণ যে আমাকে বিস্মিত করে ছেড়েছে, তা নয়। ব্যাটারদের প্রতিক্রিয়া দেখে আরও অবাক হয়ে গিয়েছিলাম আমি। যেন প্রত্যেকে আনকোরা। কেউ জানে না কী করে বিপক্ষের বোলিং সামলাতে হবে? ওদের দেখে মনে হচ্ছিল, ওরা কেউ ক্রিকেট খেলছে না। বরং ওদের কেউ অভিশাপের মুখে ছুড়ে দিয়েছে। অ্যাশেজে এই নিয়ে দু’টো টেস্ট তিন দিন পর্যন্ত গেল না। এমন নয় যে, বোলারদের মারাত্মক স্কিলের জন্য সেটা হয়েছে। সেটা হয়েছে, ব্যাটারদের ভালো করার তাড়নার কারণে। ব্যাটাররা কাণ্ডজ্ঞানহীনভাবে শট খেলছিল। অহেতুক সাহসিকতা দেখাতে গিয়ে বিসর্জন দিয়েছিল টেকনিককে। পরিণতি কী হল, দেখতেই পাচ্ছেন আপনারা।’
গুরু গ্রেগের মনে হচ্ছে, চলতি অ্যাশেজে টেস্ট ক্রিকেটের সঙ্গেই বিশ্বাসঘাতকতা করছেন দু’টো টিমের ক্রিকেটাররা। ‘মাথায় রাখতে হবে, ওরাই প্রথম নয় যারা কি না পিচ সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হল। আবার ওরাই শেষ নয়, যারা কি না এ রকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হল। টেস্ট ক্রিকেট বিনোদন নয়। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে তবে টেস্টে সাফল্য পাওয়া যায়। দেড়শো বছর ধরে টেস্ট ক্রিকেটের ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে। এতই সহজ, সেই জমিতে সাফল্য পাওয়া?’ প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন গ্রেগ।
