সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিছু স্বপ্ন কোটি কোটি মানুষের জন্য। পুরুষ নয়, মহিলা নয়। শুধুই দেশবাসীর জন্য। ইংরেজিতে 'চ্যাম্পিয়ন' হোক, বা বাংলায় 'বিশ্বজয়ী', তা তো লিঙ্গবৈষম্যহীন। ক্রিকেটকে বলা হয় 'জেন্টলম্যানস গেম'। আর 'হয়' নয়, এবার কি 'হত' বলা যাবে? কারণ বিশ্বজয়ের পরদিন ট্রফির সঙ্গে ছবি দিয়ে হরমনপ্রীত কৌরের (Harmanpreet Kaur) লিঙ্গবৈষম্য ঘোচানোর বার্তা 'ক্রিকেট সবার খেলা'।
সত্যিই তো। ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত। পুরুষ-মহিলা নয়, চ্যাম্পিয়ন হয়েছে টিম ইন্ডিয়া। রাতজুড়ে উল্লাস চলেছে ক্রিকেটভক্তদের। গোটা দেশে খুশির হাওয়া। সেলিব্রেশনের একের পর এক ছবি আপলোড করছেন স্মৃতি-জেমাইমারা। ছবি দিলেন ভারত অধিনায়ক হরমনপ্রীতও। ইনস্টাগ্রামের সেই ছবিতে ট্রফি জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছেন তিনি। আর তাঁর শার্টের পিছনে বার্তায় ক্রিকেটের পর জেন্টলম্যান'স শব্দটি কাটা। তারপর লেখা 'সবার খেলা'। ক্রিকেট যে লিঙ্গবৈষম্যের ঊর্ধ্বে, বিশ্বজয়ী হয়ে তা প্রমাণ করে দিলেন হরমন। সঙ্গে ক্যাপশন, 'কিছু স্বপ্ন কোটি কোটি মানুষের জন্য। এই জন্যই ক্রিকেট সবার খেলা।'
বার্তাটা বোধহয় খুব দরকার। এই দলের অনেককেই শুধুমাত্র নারী বলে ক্রিকেট খেলায় বাধা পেতে হয়েছে। ফাইনালের নায়ক শেফালি বর্মাকেও শুনতে হয়েছিল, মেয়েদের আবার খেলা কীসের? তাই দাদাদের সঙ্গে ছেলে সেজে ছেলেদের টুর্নামেন্টে খেলে যেতেন। স্বয়ং হরমনপ্রীতই কোমরে ওড়না বেঁধে স্থানীয় ছেলেদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতেন। অনেক বেড়া ভেঙে দিয়ে এই জয়। আজ থেকে কোনও অভিভাবক তাঁর কন্যাকে বলতেই পারেন, “দেখো, হরমনপ্রীতের মতো হতে হবে।” উঠতি ক্রিকেট প্রতিভাদের ঘরে ঘরে থাকবে ‘হ্যারি দিদির’ পোস্টার। এই তো কদিন আগে ভারত টানা তিনটি ম্যাচ হারার পর কত সমালোচনা। এখন তিনিই ‘জনগণমন অধিনায়িকা’।
২০০৫ বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত হেরেছিল। ২০১৭-র বিশ্বকাপ ফাইনালেও স্বপ্নভঙ্গ। সেমিফাইনালে ১৭১ রানের একটি অসাধারণ ইনিংস খেলেছিলেন হরমনপ্রীত (Harmanpreet Kaur)। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি। অবশেষে হাতে অধরা ট্রফি। এই ট্রফি আসলে শুধু হরমন বা স্মৃতিদের নয়। ঝুলন গোস্বামী, মিতালি রাজ থেকে দেশের সব প্রাক্তন, বর্তমান ও ভবিষ্যতের মহিলা ক্রিকেটারের। কিছু স্বপ্ন বাস্তব হয় এভাবেই।
