প্রথম ইনিংস
বাংলাদেশ: ২৩৩ (মোমিনুল ১০৭, বুমরাহ ৫০/৩)
ভারত: ২৮৫/৯ ডিক্লেয়ার (যশস্বী ৭২, মেহেদি ৪৩/৪)
দ্বিতীয় ইনিংস
বাংলাদেশ: ১৪৬ (শাদমান ৫০, বুমরাহ ১৭/৩)
ভারত: ৯৮/৩ (যশস্বী ৫১, বিরাট ২৯, মেহেদি ৪৪/২)
ভারত জয়ী ৭ উইকেটে।
ভারত টেস্ট সিরিজ জিতল ২-০ ব্যবধানে।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাঁচ দিনেই শেষ হল কানপুর টেস্ট। কিন্তু জয় এল আড়াই দিনেরও কম সময়ে। বাধার নাম যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে ঝড় কাকে বলে সেটা দেখালেন রোহিত শর্মারা। টেস্ট না টি-টোয়েন্টি, ধরতে পারবেন না! টি-টেন বলেও ডাকছেন অনেকে। তার পর জয় ছিল সময়ের অপেক্ষা। দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ পকেটে পুরে নিল ভারত। সিরিজ হোয়াইটওয়াশ হয়েই দেশে ফিরবেন শান্তরা।
ভারতে আসার আগে পাকিস্তানকে দুটি টেস্টেই হারিয়ে এসেছিল বাংলাদেশ। ভারতের মাটিতে রোহিতদের হারাবেন, এরকম স্বপ্নও দেখেছিলেন অনেকে। কিন্তু স্বপ্ন আর বাস্তবের মধ্যে পার্থক্য কতটা সেটা নিশ্চয়ই এখন বুঝতে পারছেন শাকিব-মুশফিকুররা। চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্টে হেরেছিলেন ২৮০ রানে। দ্বিতীয় টেস্টে ভারত জিতল ৭ উইকেটে।
অথচ একটা সময় মনে হচ্ছিল, ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছে এই টেস্ট। বৃষ্টির জন্য প্রথম দিন হয়েছিল মাত্র ৩৫ ওভার। তখন বাংলাদেশের ব্যাটিং স্থিতিশীল জায়গায় ছিল। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে বলই গড়ায়নি। চতুর্থ দিনে যখন দুদল মাঠে নামে, তখন কে জানত টেস্ট ক্রিকেটের সংজ্ঞাই বদলে দেবেন রোহিতরা। হাতে মাত্র দুদিন। বাংলাদেশ ব্যাটিংকে ধরাশায়ী করার কাজটা করে দেন বুমরাহ-অশ্বিনরা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ থেমে গিয়েছিল ২৩৩ রানে। লড়াকু সেঞ্চুরি করেছিলেন মোমিনুল হক। তার পরই শুরু হয় ভারতের আসল 'খেলা'। প্রথম তিন ওভারে রোহিত-যশস্বী তোলেন ৫০ রানের বেশি। চতুর্থ দিনে দলগত দ্রুততম ৫০, ১০০, ২০০ সবই ছিল ভারতের নামে। জয়সওয়াল করেন ৭২ রান। নিজস্ব 'বাজবলে' ৩৫ ওভারের মধ্যে ভারত করে ২৮৫ রান।
চতুর্থ দিনের শেষেই যখন বাংলাদেশ ব্যাট করতে নামে, তখন তারা পিছিয়ে ছিল ৫২ রানে। সেটাকে টপকালেন তারা। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারলেন না। বাংলাদেশের ইনিংস থামল ১৪৬ রানে। মাত্র ৯৫ রানের লক্ষ্য দিয়েছিলেন শাদমানরা। রোহিত-যশস্বীরা যে তাণ্ডব দেখিয়েছেন, তাতে ভারতের জয় পেতে বেশি সময় লাগার কথা ছিল না। সকালে বরং সেটা আটকানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন শাদমান ইসলাম। হাফসেঞ্চুরিও করেন তিনি। কিন্তু অধিনায়ক শান্তর সামান্য প্রতিরোধ ছাড়াও কাউকেই পাশে পেলেন না তিনি। শূন্য রানে ফিরে গেলেন শাকিব আল হাসান। সম্ভবত এটাই তাঁর জীবনের শেষ টেস্ট। আর সেটার পরিসমাপ্তি খুব একটা ভালো হল না। শেষের দিকে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম কিছুটা চেষ্টা করেন। তাতেও অবশ্য শেষরক্ষা হল না। ব্যক্তিগত ৩৭ রানের মাথায় বুমরাহর বলে বোল্ড হয়ে গেলেন মুশফিকুর। অশ্বিন পেলেন ৩ উইকেট, জাদেজার সংগ্রহ ৩। বুমরাহও তুলে নিলেন ৩ উইকেট।
অনায়াস লক্ষ্য, অনায়াস জয়। অপেক্ষা ছিল, কত সহজে সেটা পার করা যায়। বিরাট-যশস্বী আবার সেই বিধ্বংসী ঢংয়েই শুরু করেছিলেন। ভারতের অধিনায়ক অবশ্য তাড়াতাড়ি ফিরে গেলেন। শুভমান গিলও বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। বাকি কাজটা করে দিলেন যশস্বী ও বিরাট। যশস্বী এই ইনিংসেও হাফসেঞ্চুরি করলেন। ম্যাচের সেরাও হলেন। বিরাট কোহলি অপরাজিত রইলেন ২৯ রানে। ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতল ভারত। সিরিজের সেরা হলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। 'হোয়াইটওয়াশ' হল বাংলাদেশ। ভারত এবার উড়ান নেবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের দিকে। আর পাকিস্তানকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশের স্বপ্ন থেকে নেমে এল বাস্তবের মাটিতে।