shono
Advertisement

রিঙ্কু যা খেলছিল, আমি বল করলেও পাঁচ ছক্কা খেতাম: রশিদ খান

Posted: 11:36 AM Apr 28, 2023Updated: 11:36 AM Apr 28, 2023

বক্তার নাম আফগানিস্তানের স্পিন-ব্রহ্মাস্ত্র রশিদ খান (Rashid Khan)। গুজরাত টাইটান্সে খেলেন এবং শনিবাসরীয় ইডেনে কেকেআরের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হতে চলেছেন যিনি। দিন কয়েক আগে গুজরাত টাইটান্স রশিদ খানের সঙ্গে কথোপকথন রেকর্ড করেছিল। বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে। এ দিন যে রেকর্ডিং এল ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর হাতে। ইডেন ম‌্যাচের প্রাক্-লগ্নে শুনলেন রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়

Advertisement

আইপিএলের প্রথম হ‌্যাটট্রিক...

রশিদ: তিন বলে তিন উইকেট নেওয়া খুব সহজ হয় না। কখনও কখনও হয়। জীবনে অন্তত আট-দশ বার আমি হ‌্যাটট্রিক মিস করেছি। অনেকে জিজ্ঞাসা করেন, পরপর দু’বলে দু’উইকেট নেওয়ার পর তৃতীয় বলটা করার আগে আমার মানসিকতা কেমন থাকে? পরিষ্কার বলছি, হ‌্যাটট্রিক করতেই হবে, এমন ভাবি না আমি। শুধু চেষ্টা করি নিজের একশো শতাংশ দিতে। হ‌্যাটট্রিক পেলে পেলাম, না পেলেও ঠিক আছে। কেকেআরের (KKR) বিরুদ্ধে আহমেদাবাদে প্রথম আইপিএল হ‌্যাটট্রিক পেলাম আমি। আমার সেদিনও একটাই টার্গেট ছিল–সঠিক জায়গায় বলকে ফেলা। ভেবেছিলাম, ব‌্যাটার যদি আমার বলটা খেলে দেয়, দেবে। নইলে আমার লাভ। আবারও বলছি, হ‌্যাটট্রিক করতেই হবে ভেবে আমি কিছু করি না। কারণ সেটা ভাবলে, ভুল করে বসব।

কেকেআরের বিরুদ্ধে যশ দয়ালকে মারা রিঙ্কু সিংয়ের পাঁচ ছক্কা...

রশিদ: দেখুন, এটা ক্রিকেট। আর ক্রিকেটে এ সমস্ত হতেই পারে। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে বেন স্টোকসও তো পরপর চারটে ছয় খেয়েছিল। এটাই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট, এখানে বোলার এক ওভারে ছ’টা ছয়ও খেতে পারে! আর এই জিনিস ভবিষ‌্যতে ফের ঘটতে পারে। সে দিনের পর যশ সত্যিই ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু যে ভাবে টিম ওকে সামলে রেখেছিল, দেখার মতো। আশিস ভাই (আশিস নেহরা), হার্দিক (পান্ডিয়া), টিমের বাকি সিনিয়ররা–প্রত্যেকের কথা আমি বলব। আমরা সে দিনের পর থেকে ব‌্যাপারটা নিয়ে একবারও আলোচনা করিনি। একবারও রিঙ্কুর (Rinku Singh) সেই পাঁচ ছয়ের প্রসঙ্গ তুলিনি। আর মনে রাখতে হবে, রিঙ্কু সে দিন প্রতিটা শট ভাল খেলেছিল। একটাও মিস করেনি। আর এমন নয় যে, যশ সব ক’টা বল খারাপ করেছিল। আমি তো বলব, তিনটে বল যশ সে দিন ভাল করেছিল। দেখুন, কেউ ইচ্ছে করে পাঁচটা ছয় খায় না। রিঙ্কুর দিন ছিল সে দিন আমেদাবাদে। যা মারছিল, সব ছয়! আর যশের বদলে অন‌্য কেউ গেলেও সে দিন একই পরিণতি হতে পারত। সে-ও পাঁচটা ছয় খেতে পারত। এমনকী আমি বল করতে গেলে, আমিও পাঁচটা ছয় খেতে পারতাম! দিস ইজ ক্রিকেট!

গুজরাতের মতো চ‌্যাম্পিয়ন টিমের প্রস্তুতি শিডিউল...
রশিদ: বাকি টিমের মতো একই প্রায়। আমাদের কোচ আশিস ভাই একটা কথা বলে। বলে যে, একশো শতাংশ দাও সব সময় নিজের। ম‌্যাচের জন‌্য নিজেকে ভাল করে তৈরি করো। কিন্তু ম‌্যাচ নিয়ে ভাবতে যেও না। ম‌্যাচে যা হবে, দেখা যাবে। আমরা যার যেমন প্রয়োজন, সেই অনুযায়ী নিজেদের প্রস্তুত করি। আর পরিবেশকে রিল‌্যাক্সড, ঝরঝরে রাখা হয়।

[আরও পড়ুন: ‘আমি ব্যথিত, দ্রুত বিচার চাই’, ধরনারত কুস্তিগিরদের পাশে এবার সোনার ছেলে নীরজ]

ইমপ‌্যাক্ট প্লেয়ার আসায় অলরাউন্ডারদের দুর্দিন কি না...
রশিদ: হার্দিক পাণ্ডিয়া, বেন স্টোকস, স‌্যাম কারানদের মতো অলরাউন্ডারদের আলোচনার বাইরে রাখছি। ওদের জাত আলাদা। কিন্তু ইমপ‌্যাক্ট প্লেয়ার চলে আসার পর অলরাউন্ডারদের কাজটা সত্যি কঠিন হয়ে গিয়েছে। যা অবস্থা, তাতে একটু মধ‌্যবিত্ত অলরাউন্ডার যারা, তাদের যে কোনও একটায় বেশি ভাল হতে হবে। মানে, ব‌্যাটিং বা বোলিং-যে কোনও একটা বিভাগে সত্তর থেকে আশি শতাংশ দখল থাকতে হবে। অন‌্যটায় কুড়ি বা তিরিশ শতাংশ হলে চলে যাবে। কিন্তু দক্ষতার ভাগাভাগি পঞ্চাশ-পঞ্চাশ হয়ে গেলে মুশকিল।

হোম-অ‌্যাওয়ে ফর্ম‌্যাটের প্রত‌্যাবর্তনের পর ঘরের মাঠের ফায়দা পুরো না তুলতে পারা...
রশিদ: একটু সময় তো দিতে হবে প্লেয়ারদের অ‌্যাডজাস্ট করার। তিন বছর পর পুরনো ফর্ম‌্যাটে ফিরছে আইপিএল। আগে নিজের কেন্দ্র, নিজের ঘরের মাঠ অনুযায়ী প্লেয়াররা অ‌্যাডজাস্ট করত। এখন প্লেয়ার ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। ব‌্যাঙ্গালোরের প্লেয়ার চেন্নাই চলে গিয়েছে। চেন্নাইয়ের ক্রিকেটার গুজরাতে (Gujarat Titans) চলে এসেছে। তাই দু’তিন বছর লাগবে একটু মানিয়ে নিতে। আর আপাতত, যারা পরিবেশ-পরিস্থিতির সঙ্গে দ্রুত অ‌্যাডজাস্ট করতে পারবে, তাদের জেতার সম্ভাবনা তত বেশি।

গুরু গ‌্যারির সান্নিধ‌্য...
রশিদ: গ‌্যারি কার্স্টেনের সঙ্গে কাজ করে আমার ব‌্যাটিংয়ে প্রচুর উন্নতি হয়েছে। গত বার আমি যখন গুজরাত টাইটান্সে যোগ দিই, আশিস ভাই আমাকে বলেছিল, শুধু বোলার রশিদ খানকে আমরা চাই না। তুমি অলরাউন্ডার। তুমি যত ইচ্ছে ব‌্যাট করার সুযোগ পাবে। তার পর আমি গ‌্যারির সঙ্গে নেটে খাটতে শুরু করি। গত বার আমাকে গ‌্যারি যা সাহায‌্য করেছিল, বলার নয়। রেজাল্ট সবাই দেখেছে। গ‌্যারি এমন একজন লোক, যে কি না খুব পরিশ্রম করে। আর শুধু গ‌্যারি কেন, আশিস ভাইও অসম্ভব খাটতে পারে। আমরা যে আইপিএলে চ‌্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম গত বার, তার প্রধান কারণ আমাদের কোচদের অক্লান্ত পরিশ্রম।

ইডেনে আইপিএলের শততম ম‌্যাচ...
রশিদ: ভাবলেই দারুণ লাগছে। একজন বিদেশি বোলারের পক্ষে শততম ম‌্যাচ খেলা কিন্তু সহজ নয়। আমি যে দিন আইপিএলে অভিষেক করেছিলাম, তার পর থেকে একটা ম‌্যাচেও বাদ পড়িনি। দেখুন, আইপিএল পর্যন্ত পৌঁছনোর কাজটা খুব কঠিন নয়। আপনি বিশ্বের বিভিন্ন লিগে খেলে চোখে পড়লেন, তার পর আইপিএল টিম পেয়ে গেলেন। কঠিন হল, পরের পর্বটা। আইপিএলে নিজের জায়গাটা বছরের পর বছর ধরে রাখা। আমার চ‌্যালেঞ্জ ছিল, আইপিএলে লম্বা সময় ধরে খেলে যাওয়া।

[আরও পড়ুন: বিতর্কের মধ্যেই একমঞ্চে আদানি-মোহন ভাগবত, সঙ্গী প্রথম সারির বিজেপি নেতারা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement