সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আইপিএলে দল পেলেন না একজন বাংলাদেশিও। এবারের নিলামে মোট ১২ জন বাংলাদেশি নাম লিখিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও দল বাংলাদেশের কোনও ক্রিকেটারের জন্য বিন্দুমাত্র আগ্রহ দেখায়নি। এর নেপথ্যে কি কোনও অক্রিকেটিয় কারণ রয়েছে? সেই নিয়েও শুরু হয়েছে গুঞ্জন।
এমনিতে আইপিএলের সঙ্গে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের সম্পর্ক অম্লমধুর। যেমন মাশরাফি মুর্তাজা, মহম্মদ আশরাফুলের কেরিয়ার এক ম্যাচেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। আবার মুস্তাফিজুর রহমান, শাকিব আল হাসানের মতো তারকারা যথেষ্ট সফল। যাঁরা এর আগে আইপিএল জিতেছেন। তবে আইপিএলে একজন-দুজন করে হলেও বাংলাদেশি ক্রিকেটার সুযোগ পান। এবারের আইপিএলের নিলামে বাংলাদেশিদের মধ্যে ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান (বেস প্রাইস ২ কোটি), শাকিব আল হাসান (বেস প্রাইস ১ কোটি), তাসকিন আহমেদরা (বেস প্রাইস ১ কোটি)। এছাড়াও লিটন দাস, তৌহিদ হৃদয়, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান শাকিব, মেহেদি হাসান, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানারা নিজেদের ভাগ্য পরীক্ষা করেছেন। প্রত্যেকেরই মূল্য ৭৫ লক্ষ টাকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেউ দল পাননি। কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি বিন্দুমাত্র আগ্রহ না দেখানোয় একমাত্র মুস্তাফিজুর রহমান ছাড়া বাকি কারও নামও নিলাম পর্বে ওঠেনি।
সহজ ক্রিকেটীয় বুদ্ধি বলে, বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের দল না পাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আসলে এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেটে যারা প্রথম সারির তারকা, তাঁদের চেয়ে বেশি প্রতিভাধর ক্রিকেটার ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেন। তাছাড়া যে দুজন বাংলাদেশি ক্রিকেটার বরাবর আইপিএলে দল পেয়ে থাকেন সেই মুস্তাফিজুর এবং শাকিব আল হাসানও জীবনের সেরা সময় পেরিয়ে এসেছেন। এর বাইরে যে দু-একজনের নাম ভেসে আসছিল তাঁরা হলেন নাহিদ রানা এবং রিশাদ হোসেন। এরাও দল পাননি। এদের দুজনের কারওরই আইপিএলের মতো মেগা টুর্নামেন্টে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। তাছাড়া আরও একটা কারণ আছে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের না থাকার। বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের পুরো টুর্নামেন্টে পাওয়া যাবে কিনা, সেটা নিয়েও সংশয় রয়েছে। সুতরাং কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি আর ঝুঁকি নিতে চায়নি।
তবে এর বাইরে একটা অক্রিকেটীয় কারণও থাকতে পারে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক যে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়েছে তারপর সে দেশে ভারত বিদ্বেষ মাথাচাড়া দিচ্ছে। সমানে এ দেশেও বাংলাদেশের প্রতি বিরূপ মনোভাব তৈরি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি ক্রিকেটার নিলে ফ্র্যাঞ্চাইজির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার ঝুঁকি থাকত। তাছাড়া, কোনও ক্রিকেটারকে দলে না নেওয়াটা ঘুরিয়ে বাংলাদেশকে প্রচ্ছন্ন বার্তাও হতে পারে। তবে সবটাই গুঞ্জন। আপাতত সাদা চোখে দেখে মনে হচ্ছে, ক্রিকেটীয় কারণটাই প্রাধান্য পেয়েছে।