সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবার অ্যাশেজ টেস্টের প্রথম দিনেই কুড়ি উইকেটের পতন দেখেছিল মেলবোর্ন। আর শনিবার সব মিলিয়ে পড়ল ১৬ উইকেট। তবে শেষ পর্যন্ত ৫৪৬৮ দিন পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে মাত্র দু'দিনেই টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল বেন স্টোকসের দল। এই টেস্টের আগে কার্যত কোণঠাসা ছিল ইংল্যান্ড। অতিরিক্ত মদ্যপানের অভিযোগে বিদ্ধ ছিলেন ইংরেজ ক্রিকেটাররা। সঙ্গে ছিল চুনকামের আতঙ্ক। মেলবোর্নে জিতে চুনকামের লজ্জা এড়ালেন তাঁরা।
প্রথম দিনেই শেষ হয়ে গিয়েছিল চতুর্থ টেস্টের অর্ধেক খেলা। অস্ট্রেলিয়াকে ১৫২ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পর নেসার, বোলান্ড, স্টার্কদের সামনে মাত্র ১১০ রানে ভেঙে পড়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং। ৪২ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার রান ছিল বিনা উইকেটে ৪। দ্বিতীয় দিনের শুরুতে 'নৈশপ্রহরী ওপেনার' স্কট বোলান্ড ফেরেন ৬ রানে। এরপর উইকেটের একপ্রান্ত ট্রাভিস হেড সামলে রাখলেও অন্য ব্যাটাররা সেভাবে থিতু হতে পারেননি।
জেক ওয়েদারল্ড (৫), মার্নাস লাবুশানে (৮), উসমান খোয়াজা (০), অ্যালেক্স ক্যারিরা (৪) রান পাননি। ফলে হেড ৪৬ রান করলেও কোনও পার্টনারশিপই জমাট বাঁধেনি। মাঝে স্টিভ স্মিথ ২৪ রানে অপরাজিত থাকলেন বটে, কিন্তু তাঁকে সঙ্গ দেওয়ার কেউ ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত অজিদের ইনিংস ভেঙে পড়ল ১৩২ রানে। ব্রাইডন কার্স ৪, বেন স্টোকস ৩, জশ টং ২ এবং গাস অ্যাটকিনসন পান ১ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ৪২ রানে এগিয়ে থাকার সুবাদে ইংল্যান্ডের সামনে ১৭৫ রানের লক্ষ্য রাখে অস্ট্রেলিয়া।
প্রথম ইনিংসে যেভাবে ধসে গিয়েছিল ইংল্যান্ড ব্যাটিং, তাতে আপাত নিরিখে 'দেখতে ছোট' লক্ষ্য মেলবোর্নের পিচে নেহাত কম ছিল না। তবে প্রথম ইনিংসের ভুল দ্বিতীয় ইনিংসে করলেন না ইংরেজ ব্যাটাররা। দুই ওপেনার জ্যাক ক্রলি (৩৭), বেন ডাকেট (৩৪) প্রথম উইকেটে তুললেন ৫১ রান। চারে নামা জ্যাকব বেথেল (৪০) রান পেলেন। রুট এই ইনিংসেও ব্যর্থ। করলেন মাত্র ১৫ রান। তবে ততক্ষণে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে ইংল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় স্টোকসরা।
১৫ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ফের টেস্ট জিতল ইংল্যান্ড। এর আগের ১৮ টেস্টের মধ্যে ১৬টি হার এবং দু'টি ড্র করেছিল ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তারা শেষবার জিতেছিল ২০১০-১১ সালে, সিডনিতে। অবশেষে মেলবোর্নে খরা কাটাল ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার সামনে ছিল ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ। চতুর্থ টেস্ট জিতলে সেই পথে আরও এককদম এগিয়ে থাকতেন স্টিভ স্মিথরা। মেলবোর্নে হারায় সেই স্বপ্ন অধরাই থাকবে। শেষবার তারা ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল ২০১৩-১৪ সালে।
