অর্ণব আইচ: ফের কলকাতায় ভুয়ো কল সেন্টারের সন্ধান। কলকাতায় বসে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও ব্রিটেনের বহু বাসিন্দার কাছ থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছিল ডলার ও পাউন্ড। এবার ভুয়ো কল সেন্টার চালানো ও তাতে কাজ করার অভিযোগে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
পুলিশ জানিয়েছে, কয়েকদিন আগেই তপসিয়া ও সল্টলেকের দু’টি কল সেন্টারে অভিযান চালিয়ে পুলিশ মোট ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করে। এই নিয়ে মোট গ্রেপ্তারির সংখ্যা ৩১। তাদের মধ্যে কয়েকজন এই কাজ করেই অভ্যস্ত হয়েছিল বিলাসবহুল জীবনযাপনে। তাদের জেরা করেই পুলিশ জানতে পারে যে, কলকাতায় চলছে আরও কয়েকটি ভুয়ো কলসেন্টার। সেই সূত্র ধরেই পূর্ব কলকাতার তিলজলার চৌবাগা এলাকায় হানা দেন লালবাজারের সাইবার থানার আধিকারিকরা। তাঁদের সঙ্গে ছিল গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডাদমন শাখাও। চৌবাগার একটি বড় ফ্ল্যাট নিজেদের মতো সাজিয়ে গুছিয়ে চালু করা হয়েছিল কল সেন্টার।
[আরও পড়ুন: ব্যস্ত সময়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে ঝাঁপ তরুণীর, জলপুলিশের তৎপরতায় বাঁচল প্রাণ]
অভিযোগ, সেখানে বসেই আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটেনের নাগরিকদেরও ফোন করত অভিযুক্তরা। নিজেদের পরিচয় দিত একটি সংস্থার কর্মী হিসাবে, যারা প্রযুক্তিগতভাবে সাহায্য করে। সাহায্যের নাম করেই তারা ওই নাগরিকদের একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলত। তাঁরা অ্যাপ ডাউনলোড করতেই ওই ব্যক্তির ল্যাপটপ বা কম্পিউটার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিত। একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্ক্রিন ফাঁকা করে দিত। এর পর নিজেরাই বলত, কম্পিউটার সারাতে গেলে ডলার বা পাউন্ড পাঠাতে হবে। এই টাকা একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানোর পরই তাঁদের কম্পিউটার ঠিক করে দিত তারা। কখনও আবার আরও ডলার বা পাউন্ড চাইত। যেহেতু কলকাতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, বিদেশিরা ডলার বা পাউন্ড খুইয়ে কলকাতা পুলিশকে মেল করে। তার ভিত্তিতেই সাইবার থানা শুরু করে তদন্ত।
চৌবাগা থেকে ধৃতরা হচ্ছে ইমোজ খান, মহম্মদ দিলবার আমির, মহম্মদ সোহেল, পিটার বাহাদুর, মহম্মদ রিজাউল, মহম্মদ সোয়েল খান, হাফিজ হোসেন, আকাশলাল রজক, মহম্মদ ইয়াসিন, মহম্মদ সামির, যোগেশ লাল, শশী গুপ্তা। ওই অফিস থেকে কম্পিউটার ও অন্যান্য বৈদ্যুতিন যন্ত্র, মোবাইল গোয়েন্দারা উদ্ধার করেন। তাদের জেরা করে আরও কয়েকটি ভুয়া কল সেন্টারের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।