কলকাতা নাইট রাইডার্স ১৩৭/৯ (শ্রেয়স ৩৪, নারিন ২৭, জাদেজা ৩/১৮, তুষার ৩/৩৩)
চেন্নাই সুপার কিংস ১৪১/৩ (রুতুরাজ ৬৭*, দুবে ২৮)
সাত উইকেটে ম্যাচ জিতল চেন্নাই।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টানা তিন ম্যাচ জিতে মেঘের উপর দিয়ে হাঁটছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। সোমবার চেন্নাই স্টেশনে থমকাল নাইটরা। অন্য দিকে টানা দুম্যাচে হারের পরে কিছুটা হলেও চাপে ছিল চেন্নাই সুপার কিংস। এদিন কলকাতাকে হারিয়ে জয়ের সরণিতে ফিরল চেন্নাই সুপার কিংস (CSK vs KKR)।
এদিন টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়। কলকাতার অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারও বলছিলেন, টস জিতলে তিনিও ফিল্ডিই নিতেন।
দিনের শুরু দেখে বোঝা যায় দিনটা কেমন যাবে। প্রথম বলেই ফেরেন নাইটদের ওপেনার সল্ট। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়ল কেকেআরের। ২০ ওভারের শেষে কেকেআর করে ৯ উইকেটে ১৩৭ রান। সেই রান তাড়া করতে নেমে ১৪ বল বাকি থাকতে চেন্নাই সুপার কিংস সাত উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয়। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টিকে রইলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়। ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করে গেলেন তিনি। দিনান্তে তাঁর নামের পাশে লেখা রইল ৬৭ রান। মহেন্দ্র সিং ধোনিকেও ব্যাট হাতে দেখল চিপক। কিন্তু এদিন তাঁর জন্য বিরাট কোনও চিত্রনাট্য লেখা ছিল না। এক রানে অপরাজিত থেকে যান বহু যুদ্ধের সৈনিক ধোনি।
[আরও পড়ুন: টানা হারে বিপর্যস্ত, হাল ফেরাতে নতুন বিদেশিকে দলে নিল পন্থের দিল্লি]
দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে রানের পাহাড়ে চড়েছিল কেকেআর। সুনীল নারিন শুরুতে ঝড় তুলেছিলেন। অঙ্গকৃষ রঘুবংশী, আন্দ্রে রাসেল মারমুখী ব্যাটিং করে নাইটদের নিয়ে গিয়েছিলেন রানের শৃঙ্গে। এদিন চিপকে কলকাতার ব্যাটিংটাই ভেঙে পড়ল চেন্নাই বোলারদের সামনে। পাওয়ার প্লেতে রান উঠল না। প্রথম ৬ ওভারে কেকেআর করল ৫৬ রান। শুরুতে রান কম ওঠার প্রভাব পড়ল নাইটদের ইনিংসে।
ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করে গেলেন রুতুরাজ।
প্রথম বলেই তুষার দেশপাণ্ডে ফেরান সল্টকে (0)। সুনীল নারিন আগের দিনের মতো ছন্দে ছিলেন না। যদিও তিনি এবং অঙ্গকৃষ ৫৬ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। কলকাতার ইনিংসে ধস নামান রবীন্দ্র জাদেজা। তাঁর বলেই আউট হন নারিন (২৭)। অঙ্গকৃষও (২৪) বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। জাদেজার বলে এলবিডব্লিুউ হন অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ খেলা ক্রিকেটার। ভেঙ্কটেশ আইয়ার (৩) বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারায় কেকেআর। উইকেট যাওয়ার ফলে রানও বাড়েনি নাইটদের। বড় রানের জন্য কেকেআর নির্ভরশীল ছিল রিঙ্কু, রাসেলের উপরে। তাঁরাও এদিন ব্যর্থ হন। ইনিংসে চার ও ছয়ের সংখ্যা কম হল। চেন্নাই বোলাররা সম্মোহীত করে রাখলেন নাইট ব্যাটারদের।
অথচ ম্যাচ শুরুর আগে রাসেল বলেছিলেন, ছক্কা হাঁকানোয় তাঁকে একমাত্র চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারেন রিঙ্কু সিং। এদিন না রিঙ্কু, না রাসেল, কেউই ছক্কা বর্ষণ করতে পারেননি। দেশপাণ্ডের বলে রিঙ্কু ফেরার আগে করলেন মাত্র ৯ রান। ক্যারিবিয়ান দৈত্য রাসেলও (১০) তুষার দেশপাণ্ডের শিকার। কেকেআরের ইনিংসে সর্বোচ্চ রান শ্রেয়স আইয়ারের (৩৪)।
অসহায় অধিনায়ককে একদিকে দাঁড়িয়ে দেখতে হল অন্যপ্রান্ত থেকে একের পর এক উইকেট হারাচ্ছে দল। শ্রেয়সও আগ্রাসী হওয়ার সুযোগ পেলেন না। তুষার দেশপাণ্ড ও রবীন্দ্র জাদেজা তিনটি করে উইকেট নেন। বাংলাদেশের বোলার মুস্তাফিজুর ফিরতেই চেন্নাইয়ের বোলিং শক্তিশালী হল। মুস্তাফিজুর নেন দুটি উইকেট।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ১৩৭ খুবই সামান্য রান। এই রানের পুঁজি নিয়ে ম্যাচ জিততে হলে শুরু থেকেই উইকেট নিতে হত কেকেআরকে। দলের রান যখন ২৭, তখন ফেরেন রাচীন রবীন্দ্র (১৫)। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে চারটে বলেই ম্যাচের ভাগ্য ঘুরে যেতে পারে। কিন্তু চেন্নাই অধিনায়ক রুতুরাজ ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি সামলালেন। তাড়াহুড়ো দেখা যায়নি তাঁর ব্যাটিংয়ে। আসল সময়ে কলকাতার বোলাররাও বিষ ঢালতে পারলেন না। ২৫ কোটির মিচেল স্টার্ককে অত্যন্ত সাধারণ দেখাল। সুনীল নারিনকে অযথা এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে মিচেল (২৫) ফিরলেন। চেন্নাই শিবরে তখন জয়ের গন্ধ ঢুকে পড়েছে। ম্যাচ জেতার দোরগোড়ায় এসে আউট হন শিবম দুবে (২৮)। তিন রান বাকি থাকতে মাঠে নামেন ধোনি। মাঠে নামার মুহূর্তটা ক্যামেরাবন্দি করে রাখেন দর্শকরা। এক রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। চিপকে তাঁর ও চেন্নাইয়ের নামে উঠল জয়ধ্বনি। জয়ের রাস্তায় ফিরল সিএসকে।