আকাশ মিশ্র: সম্প্রতি আমাজন প্রাইমে 'কল মি বে' সিরিজে, সোশাল মিডিয়ার কল্য়াণেই বেলার চরিত্রে দাগ কেটেছিলেন অনন্য়া পাণ্ডে। আর এবার নেটফ্লিক্সের 'কন্ট্রোল' ছবিতে সেই সোশাল মিডিয়ার বিশেষ করে এআইয়ের তাণ্ডবে অতীষ্ঠ অনন্যা ওরফে নীলা আবাস্তি।
পরিচালক বিক্রম আদিত্য মোতয়ানে 'কন্ট্রোল' ছবির চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন, এআই-এর পজেটিভ ও নেগেটিভ প্রভাব নিয়ে। তবে এই চিত্রনাট্যে পরিচালক বিক্রম স্পটলাইটে এনেছেন এআইয়ের কুপ্রভাবকেই সবচেয়ে বেশি। আর এটা করতে গিয়ে অনন্যা পাণ্ডে ও বিহান সম্মতের মধ্য়ে এক লাভস্টোরিকেই প্রেক্ষাপট করলেন বিক্রম।
ছবির গল্প বলতে, এক প্রেমের শুরু আর সেই প্রেমকেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সোশাল মিডিয়ার হাত ধরে। যেখানে ছবি আপলোড, পোস্টের মধ্যে দিয়ে প্রেমের সেলিব্রেশন। ছবির প্রথমভাগ মূলত এমনই। যেখানে আপনিও দুই চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পারবেন। যেভাবে প্রতিদিন, প্রতিটা মূহূর্তে আমরা এআইয়ের হাতের মুঠোয় বন্দি, তা খুবই সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। তবে গণ্ডগোল হল, ছবির প্রথমভাগে একটু বেশিই দীর্ঘ এবং একই জিনিস বার বারই ফিরে আসে। তাই কোথাও গিয়ে, একটু স্লথ হয়ে যায়।
তবে গল্পের মোড় ঘোরে, ছবির দ্বিতীয়ভাগে, যেখানে অনন্যা ও বিহানের ব্রেকআপ হয়, তাও আবার সোশাল মিডিয়ার হাত ধরে। এই প্রজন্মে এমন ব্রেকআপ, এমন প্রেম নিয়ে বেশ অভ্যস্ত। কিন্তু গণ্ডগোল শুরু হয়, এই প্রেম ও ব্রেকআপের মধ্যে এআই এবং সোশাল মিডিয়ার মেমোরি চলে আসায়।
বিক্রম আদিত্য মোতাওয়ানে মোটামুটি এই গল্পকেই সাজিয়েছেন। মূলত, এই গল্পের আড়ালে এই প্রজন্মের মনস্তত্ত্বকে তুলে ধরতে চেয়েছেন। এবং সে দিক থেকে সফলও তিনি। তবে এই ছবির সবচেয়ে বড় সমস্যাই হল, অভিনয়। অনন্য়া ও বিহান কেউই চিত্রনাট্যের প্রয়োজন মেটাতে পারেনি বরং তাঁরা দুজনেই বেশ দুর্বল। বলা ভালো, অনন্য়া, এই ছবির মূল হয়ে উঠতে পারতেন। কিন্তু তাঁর অভিনয় দক্ষতা, তাঁকে সে সুযোগ দেয়নি।
'কন্ট্রোল' ছবি যদি দেখতেই হয়, তাহলে চিত্রনাট্য়ের জন্য দেখা যায়। এআইয়ের বিরুদ্ধে চলা বিশ্বব্যাপী যে বিপ্লব শুরু হয়েছে, তাঁকে খুবই সহজভাবে সামনে নিয়ে এসেছেন পরিচালক। শুধু তাই নয়, এআইয়ের সুফল ও কুফলকেও খুব সুন্দরভাবে আলাদা করেছেন বিক্রম। আসলে 'কন্ট্রোল', কন্ট্রোলে থাকার ও কন্ট্রোলের বাইরে চলে যাওয়ার গল্প বলে।