অর্ণব আইচ: পুলিশকর্তা বিবেক সহায়ের নামে ভুয়ো সোশ্যাল মিডিয়া (Social media account) অ্যাকাউন্ট খুলে আর্থিক প্রতারণার চেষ্টা। তবে শেষ রক্ষা হল না। রাজস্থান থেকে লালবাজারের (Lalbazar) গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেপ্তার হল অভিযুক্ত। ধৃতের নাম রাহুল খান। এই ঘটনার পিছনে যে রাজস্থানের (Rajasthan) ভরতপুরের গ্যাংয়ের কোনও মাথা রয়েছে, তা প্রাথমিক তদন্তেই বুঝতে পেরেছিলেন গোয়েন্দারা। রাহুল খানকে গ্রেপ্তারির পর এই ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত হলেন। আপাতত ধৃত রাহুল খান সাতদিনের পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জুলাই মাসের শেষের দিকে পুলিশকর্তা তথা রাজ্যের ডিরেক্টর, সিকিউরিটি বিবেক সহায়ের নাম করে কেউ তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্টটি ক্লোন করে। অভিযুক্ত একটি ভুয়ো মেসেঞ্জার বক্সও তৈরি করে। এরপর একটি বিশেষ ফোন নম্বর থেকে বিবেক সহায়ের পরিচিতদের কাছ থেকে এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই টাকা দাবি করতে থাকে জালিয়াত। সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে পুলিশকর্তার ছবি ও মেসেজ দেখে অনেকে বিশ্বাসও করে নেয়। তাঁরই এক বন্ধু এই ব্যাপারটি তাঁকে জানান। জানতে পেরেই সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রত্যেককে সতর্ক করেন। নিজের প্রোফাইলের ছবিও পালটে দেন। কেউ যদি তাঁর নাম করে কোনও অনুরোধ করে, তবে বিষয়টি এড়িয়ে চলতে বলেন পুলিশকর্তা। একই সঙ্গে পুলিশকর্তার বন্ধু লালবাজারের সাইবার বিভাগে এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
[আরও পড়ুন: BJP ছেড়ে TMC-তে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে, জেলার গোপন রিপোর্ট মাথাব্যথা বাড়াচ্ছে গেরুয়া শিবিরের]
লালবাজার সূত্রে খবর, এর আগেও সোশ্যাল মিডিয়ায় কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের বহু পুলিশকর্তার ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি কিংবা অ্যাকাউন্ট ক্লোন(Clone) করে জালিয়াতির চেষ্টা করেছে অনেকে। এমনকী, কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারেরও জাল অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছিল জালিয়াতরা। পুলিশকর্তাদের নাম করে তাঁর ‘ফ্রেন্ড লিস্টে’ থাকা পরিচিতদের একটি বিশেষ অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর জন্য হুমকিও দেওয়া হতো। তার জন্য ভুয়া মেসেঞ্জার বক্স বানানো হয়। এর আগেও জালিয়াতদের পাতা এই ফাঁদে পা দিয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে দেখা গিয়েছে অনেককে। তাই সাইবার থানার (Cyber PS) আধিকারিকরা গুরুত্ব দিয়েই বিবেক সহায়ের এই অভিযোগের তদন্ত শুরু করেন।
[আরও পড়ুন: প্রেমে ধাক্কা, Cafe-তে কাজে গিয়ে আত্মহত্যা যুবকের, উদ্ধার ক্ষতবিক্ষত দেহ]
যে মোবাইল নম্বর থেকে টাকা চাওয়া হচ্ছিল, সেই নম্বর ট্র্যাক করে তদন্ত শুরু হয়। যে মোবাইলের সাহায্যে জালিয়াতি হয়, তার আইপি (IP) অ্যাড্রেসও পুলিশ জোগাড় করে। তার ভিত্তিতেই রাজস্থানের ভরতপুরে গোয়েন্দারা হানা দিয়ে রাহুল খানকে গ্রেপ্তার করেন। রাজস্থানের আদালতে তাকে তোলা হয়। বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে রাহুল খানকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। ধৃতকে জেরা করে এই চক্রের আরও কয়েকজনের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।