সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আতঙ্কের নাম এখন একটাই – যশ বা ইয়াস (Yaas)। এই মুহূর্তে তার নামেই তটস্থ রাজ্যবাসী। এমনকী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee) এ নিয়ে সতর্কবার্তা দিলেন। সোমবার ‘যশ’ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরের সঙ্গে জরুরি বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বললেন, ”আমফানের থেকেও বড় ঝড় হতে চলেছে। ৭২ ঘণ্টা থাকবে দুর্যোগ। কিন্তু এ নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হবেনও না, আতঙ্ক ছড়াবেন না।” আসন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকার কী কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, তাও বিস্তারিত জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ঘণ্টায় দেড়শো কিলোমিটারের বেশি গতিবেগ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চলে ঝাঁপিয়ে পড়তে চলেছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’। ২০২০ সালে ঠিক এই সময়েই সাইক্লোন আমফানে (Amphan) কার্যত তছনছ হয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী অঞ্চল। সেই ক্ষত এখনও শুকোয়নি। তা থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার ‘যশ’-এর আগমনী বার্তা শোনার পর তড়িঘড়ি একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলার একাধিক দপ্তর।
[আরও পড়ুন: ‘সহযোগিতার কথা বলেও বঞ্চনা’, যশ মোকাবিলায় ‘শাহি’ বৈঠকের পর অভিযোগ মমতার]
অনেক আগে থেকে সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চল থেকে, বাঁধের পাশ থেকে মানুষজনকে সরিয়ে ত্রাণ শিবিরে আনা হচ্ছে। কোভিড বিধি মেনে প্রস্তুত হয়েছে ত্রাণশিবিরগুলি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১০ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। ৪০০০ সাইক্লোন সেন্টার খোলা হয়েছে। সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর সাবধানবাণী, ২০ টি জেলা – দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি-সহ বেশ কয়েকটি জেলা সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হতে চলেছে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টি চলবে।মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, ”দয়া করে মৎস্যজীবীরা এই সময় সমুদ্রে যাবেন না। আপনাদের জন্য অনেক আগে থেকে সতর্কবার্তা থাকে। তবু দেখা যায়, কোনও না কোনও নৌকা সমুদ্রে গিয়েছে এবং দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমফানের সময়ে এইভাবেই আমরা বেশ কয়েকজনকে হারিয়েছি। এবার যাতে একটিও নৌকা সমুদ্র না থাকে, সে বিষয়ে বাড়তি নজরদারি চলছে।”
[আরও পড়ুন: পুলিশ হাসপাতাল বদলে গেল কোভিড চিকিৎসাকেন্দ্রে, ভারচুয়ালি উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী]
মঙ্গলবার থেকে আগামী ৪৮ ঘণ্টা নবান্নের পাশে উপান্নে খোলা কন্ট্রোলরুমে নিজে থেকে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী। বিদ্যুৎ ও পানীয় জল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার সবরকম চেষ্টা চলছে। বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল ও টিকাকেন্দ্রগুলিতে। এদিন সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ”এই দুর্যোগের সময় সহযোগিতা করুন। এই সময়ে সব কাজ করতে একটু সময় লাগবে। সেই সময়টুকু ধৈর্য ধরতে হবে। অযথা নেগেটিভ প্রচার করবেন না।” তবে সবমিলিয়ে, ‘যশ’ নিয়ে উদ্বেগ কাটিয়েও তার মোকাবিলা করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা রয়েছে রাজ্য সরকারের।