নব্যেন্দু হাজরা: দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। রবিবার সন্ধেয় ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে নিম্নচাপ। ঘূর্ণিঝড় আমফান সন্ধের পর প্রথমে উত্তর-পশ্চিম পরে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হবে। একইসঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বর্ষা ঢুকছে আন্দামান নিকোবরে। পরিস্থিতি অনুকূল থাকায় দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ঢুকবে আন্দামান সাগর আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। ঘূর্ণিঝড় অভিমুখ পরিবর্তন করার সঙ্গে সঙ্গেই সোমবার থেকে আবহাওয়ারও পরিবর্তন হবে এ রাজ্যে।
মঙ্গল ও বুধবার ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হবে দক্ষিণবঙ্গের উপকূলের জেলাগুলিতে। ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়া বইবার আশঙ্কা। উত্তর বঙ্গোপসাগরে সমুদ্র উত্তাল হবে। এবং সমুদ্রের ভিতরে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ ১৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। রবিবার সকাল থেকেই আবহাওয়াবিদরা প্রাক ঘূর্ণিঝড়ের গতি প্রকৃতির উপর নজর রাখছেন। এই গভীর নিম্নচাপের অবস্থান ছিল দিঘা থেকে বারোশো পঞ্চাশ কিলোমিটার দক্ষিণে। পারাদ্বীপ থেকে ১১ কিলোমিটার দক্ষিণে। বিশাখাপত্তনম থেকে ৯০০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব। এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ১৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে।
আবহাওয়াবিদদের অনুমান, উত্তর বঙ্গোপসাগরে আসার সময় এই ঘূর্ণিঝড় অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে সমুদ্রের ভিতরে এর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০-১৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে আবহবিদদের অনুমান। গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সময় এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪৫-৬৫ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর এর গতিবেগ হবে ৯০-১১০ কিলোমিটার। সোমবার মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করার সময় শক্তি সঞ্চয় করে এই ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘন্টায় ১২০-১৪৫ কিলোমিটার হতে পারে। মধ্য বঙ্গোপসাগর থেকে অভিমুখ পরিবর্তন করার পর আরও শক্তিশালী হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর অভিমুখে যাওয়ার সময় এই ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘন্টায় ১৫০-১৮০ কিলোমিটার হতে পারে।
[আরও পড়ুন: সরকারের দেওয়া মাছের খাবার চুরি করে চড়া দামে বিক্রি! তৃণমূল নেতাকে ঘিরে বিক্ষোভ]
তবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে এসে এর অবস্থান কী হবে তা নিয়ে এখনো নিশ্চিত নন আবহাওয়াবিদরা। অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান শেষ পর্যন্ত স্থলভাগকে প্রবেশ করবে কিনা কিংবা স্থলভাগের প্রবেশ করলে ঠিক কোন জায়গায় ল্যান্ডফল হবে সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি আবহাওয়াবিদরা। উত্তর বঙ্গোপসাগরে আসার পর এ রাজ্যে এই ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা। কলকাতা শহর সাত জেলায় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা মঙ্গল ও বুধবার। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনা। এই সাত জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে অতি ভারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতেও বিক্ষিপ্ত মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। উপকূলের জেলা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের ঝড়ের গতিবেগ ৯০ কিলোমিটার হতে পারে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাগুলিতেও ঝড়বৃষ্টির ব্যাপকতা থাকবে। হালকা ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি হবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতেও। বুধবার সন্ধেয় আমফান পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মাঝখান দিয়ে প্রবেশ করবে স্থলভাগে। সেই সময়ে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় সাইক্লোন হিসেবে এটি ঢুকবে।
[আরও পড়ুন: দুর্ঘটনার কবলে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাস, জখম বাংলার ২০ জন শ্রমিক]
The post ক্রমশ বাংলার দিকে ধেয়ে আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা appeared first on Sangbad Pratidin.