সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'সুপ্রিম কোর্ট 'জনতার আদালত'-এর ভূমিকা পালন করবে ঠিকই, কিন্তু তার অর্থ এটা নয় যে আদালতকে সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে হবে।' শনিবার এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এমনটাই জানালেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন, আইনি সিদ্ধান্তে অসঙ্গতি বা ভুলের সমালোচনা করা উচিৎ ঠিকই কিন্তু কোনও সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তা দেখা উচিৎ নয়।
শনিবার গোয়ায় সুপ্রিম কোর্ট অ্যাডভোকেটস অন রেকর্ড অ্যাসোসিয়েশনের তরফে এক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, "গত ৭৫ বছর ধরে ধীরে ধীরে বিকশিত হয়েছে শীর্ষ আদালত। সেখানে এমন কিছু অসাধারণ পরিবর্তন হয়েছে যাকে এড়িয়ে যাওয়া কখনই সম্ভব নয়।" বিচারপতি বলেন, "দিনে দিনে সমাজ আরও বড় হচ্ছে, সমৃদ্ধ হচ্ছে। ফলে এমন ধারণা তৈরি হতেই পারে যে আদালত শুধুমাত্র বড় বড় বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দেবে। কিন্তু আমাদের বিচার ব্যবস্থা এমন নয়। আমাদের আদালত জনতার আদালত, এবং আমার মনে হয় আদালতের নজরেই শীর্ষ আদালতকে দেখা উচিৎ।"
এর পরই তিনি বলেন, "জনতার আদালতের অর্থ এমটা নয় যে আমরা সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব। আমার মনে হয় বর্তমান পরিস্থিতি এমন একটা বিভাজনের মধ্যে আটকে গিয়েছে যেখানে আদালত যখন এক পক্ষে রায় দেয় তখন আদালতের সুনাম হয়, অন্য পক্ষের দিকে রায় গেলে তখন আদালতের বদনাম করা হয়। এটা বড় বিপজ্জনক প্রবৃত্তি। যে কোনও ব্যক্তিগত মামলায় যুক্তি ও বিবেচনার প্রেক্ষিতে রায় ঘোষণা করা হয়। ফলে রায় আপনার পক্ষে বা বিপক্ষে যেতেই পারে।"
আদালতের সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমি একথা বলতেই পারি সমালোচনায় কোনও সমস্যা নেই বিচারপতিদের। কিন্তু সমস্যা তখনই হয়, যখন দেখা যায় আদালতের রায় একটি বিশেষ পথে এগোচ্ছে এবং তখনই সমালোচনা শুরু হয়। কারণ রায় এক পক্ষের বিরুদ্ধে যাচ্ছে।" পাশাপাশি তিনি জানান, ''ধাপে ধাপে বিচার ব্যবস্থায় বহু ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যেমন ই-ফাইলিং, কেস রেকর্ডের ডিজিটালাইজেশন, আদালতের বিচার প্রক্রিয়ার লাইভস্ট্রিমিং প্রভৃতি। এখন আদালত আর সেখানে উপস্থিত ২৫-৩০-৪০ জন উকিল ও বিচারপতিকে নিয়ে নয়, বরং এক আঙুলের ছোঁয়ায় ২ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে যাই আমরা।''