রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: ছেলে উচ্চ মাধ্যমিকে (Higher Secondary) স্কুলে প্রথম, জানেনই না দিনমজুর বাবা। মাঠে বসে লোক মারফৎ পেলেন সুখবর। ভাগচাষির ছেলের এই ফলাফলে মা-বাবা ও প্রতিবেশীদের মুখে হাসি। খুশি স্কুল কর্তৃপক্ষও।
নদিয়ার (Nadia) তেহট্ট থানার চিলাখালি দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা রণবীর শিকদার। সিদ্ধেশ্বরীতলা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সে। বাবা রঞ্জিত শিকদার পেশায় দিনমজুর। মা পুষ্পা গৃহবধূ। সংসার চালাতে সকাল থেকে সন্ধে জমিতে কাজ করেন রঞ্জিত। মা-ও ব্যস্ত থাকেন কাজে। ফলে ছোট থেকে রণবীরের দেখভাল-সহ সবকিছুরই একপ্রকার দায়িত্ব নিয়েছিলেন প্রতিবেশী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রকাশচন্দ্র রায়। স্কুলে ভর্তি, বই কেনা, টিউশনে নিয়ে যাওয়া এমনকী নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পড়াতেনও প্রকাশবাবু। এর পাশাপাশি পড়াশোনায় ভালো হওয়ায় স্কুলের সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নজর ছিল রণবীরের উপর।
[আরও পড়ুন: অভিযোগকারীরা বিজেপির মুখোশ খুলে দিচ্ছে! সন্দেশখালি কাণ্ডে এবার তৃণমূলের পাশে কংগ্রেস]
সেই রণবীরই এবার উচ্চ মাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল করল। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৬৩। বাংলায় পেয়েছে ৯১। ইংরেজিতে ৯৮। রসায়নে ৯০। পদার্থ বিদ্যায় ৮৪ এবং অঙ্কে ১০০। রণবীরের বাবা জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে বাড়িতে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পড়াশোনা করত। শুধু তাই নয়, প্রকাশচন্দ্র রায় তাঁকে পড়ানোর সব রকম ব্যবস্থা করেছেন। প্রকাশবাবু না থাকলে তাঁর ছেলে এতদূর পৌঁছতে পারত না। প্রকাশবাবু বলেন, “পড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ ওর। প্রতিবেশী হওয়ার সুবাদে খুব ছোট থেকেই আমার বাড়িতেই সব সময় থাকে। আমার সাধ্যমত যতটুকু সম্ভব পড়াশোনার বিষয়ে ওকে গাইড করেছি। ভবিষ্যতে পড়াশোনার জন্য যা ব্যবস্থা করার করব।”