শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: বাইরে ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত।কিন্তু ঘরের অন্দরেই নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত হলেন জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়। পণের দাবিতে নিয়মিত নির্যাতন করতেন বলে পুলিশের কাছে স্বামী এবং শ্বশুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন খগেশ্বর বাবুর পুত্রবধূ। ঘটনায় চাঞ্চল্য রাজনৈতিক মহলে। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিধায়ক খগেশ্বর রায় (Khageswar Roy)। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
২০১৯ সালে জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের উল্লাডাবরি ডাঙাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বলিদেব রায়ের মেয়ে পিঙ্কির সঙ্গে রাজগঞ্জ ব্লকের পাতিলাভাষা গ্রামের বাসিন্দা খগেশ্বর রায়ের ছেলে দিবাকরের সম্বন্ধ করে বিয়ে হয়। পুত্রবধূ পিঙ্কি রায়ের অভিযোগ, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তাঁর উপর স্বামী-সহ পরিবারের অন্যান্যরা শারিরীক ও মানসিক অত্যাচার চালাতে থাকে। মাঝেমধ্যেই বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিতে থাকেন তাঁরা। আর এই টাকার জন্য প্রায়দিনই শ্বশুর ও তাঁর ছেলে মদ্যপ অবস্থায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: ‘জেপি নাড্ডা জোকার’, বঙ্গ সফরের মধ্যেই বিজেপি সভাপতিকে বেনজির কটাক্ষ সৌগতর]
তাঁর আরও অভিযোগ, নগদ টাকা, সোনাদানা দিয়ে যেহেতু বিয়ে দিয়েছে পরিবার সে কারণে লজ্জার চোটে আবার টাকা দেওয়ার জন্য বাড়িতে কিছু বলতেন না। অত্যাচার সহ্য করতেন তিনিই। জানান, গত বছর ২৭ অগাস্ট বিকেলে শ্বাশুড়ি তাঁর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে দেয়। এরপর শ্বাশুড়ি দেশলাই আনতে গেলে কোনক্রমে পালিয়ে সোজা বাপের বাড়ি চলে আসেন। পিঙ্কি জানান, ঘটনার বিচার চাইতেই পুলিশের দ্বারস্থ হন। লিখিত অভিযোগ করলেও রাজগঞ্জ থানার পুলিশ তাঁকে অভিযোগ সংক্রান্ত কোনও রিসিভ কপি দেয়নি বলেই দাবি।
পুত্রবধূর তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিধায়ক খগেশ্বর রায়। ময়নাগুড়ির বিধায়কের চড় কাণ্ডের পরই রাজগঞ্জের বিধায়কের বিরুদ্ধে পুত্রবধূর উপর নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে তৃণমূল (TMC)। যদিও জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর বক্তব্য, “এটা তাঁদের পারিবারিক ব্যাপার। আমি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।” ঘটনায় জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, “রাজগঞ্জ থানায় একটি গার্হ্যস্থ হিংসার ঘটনা নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আমরা অভিযোগকারিণীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি রাজি হওয়ায় নির্দিষ্ট দপ্তরের প্রোটেকশন অফিসারের কাছে পাঠানো হয়েছে।”