shono
Advertisement
China

'শুল্ক-মিসাইল' ছুড়েছিলেন ট্রাম্প, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে 'পালটা মার' চিনের

চিনের উপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করেছে আমেরিকা।
Published By: Suchinta Pal ChowdhuryPosted: 05:29 PM Apr 04, 2025Updated: 07:44 PM Apr 04, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বুধবার গভীর রাতে 'শুল্ক-মিসাইল' ছুড়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। চিনের উপর ৩৪ শতাংশ কর চাপানোর ঘোষণা করেন তিনি। যা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছিল বেজিং। হুঙ্কার দেওয়া হয়েছিল পালটা 'বদলা' নেওয়ার। আর ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই 'শুল্কযুদ্ধে'র আগুনে ঘি ঢেলে আমেরিকার পণ্যের উপর অতিরিক্ত ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করল শি জিনপিংয়ের দেশ। এবার চিনের এই পালটা মারের 'প্রতিশোধ' মার্কিন প্রেসিডেন্ট কীভাবে নেবেন, সেদিকেই তাকিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মহল। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ক্রমেই এভাবে বেলাগাম হচ্ছে 'বাণিজ্য সংঘাত'। যার প্রভাব পড়ছে বিশ্ব অর্থনীতিতে।

Advertisement

গত বছরের নভেম্বরে নির্বাচন জিতে ফের আমেরিকার মসনদে বসেন ট্রাম্প। আর ক্ষমতায় ফিরেই তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, যে দেশ আমেরিকার পণ্যে যতটা শুল্ক চাপিয়ে থাকে, ২ এপ্রিল থেকে সেই দেশের পণ্যে পালটা তার উপযুক্ত শুল্ক চাপানো হবে। সেই মতোই গতকাল বুধবার ভারতীয় সময় রাত দেড়টা নাগাদ (আমেরিকার স্থানীয় সময় অনুযায়ী বিকেল ৪টেয়)‘পারস্পরিক শুল্ক’ ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ভারতের পণ্যের উপর ২৬ শতাংশ, চিনে থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে হোয়াইট হাউস। এর পরের দিনই অর্থাৎ বিবৃতি দিয়ে চিনের বাণিজ্য মন্ত্রক বলে, অবিলম্বে এই শুল্ক বাতিল করতে হবে আমেরিকাকে। না হলে বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিপন্ন হবে। এইভাবে বাণিজ্যযুদ্ধে কেউ জয়ী হতে পারে না। এর মূল্য চোকাতে হবে আমেরিকাকে।

আজ শুক্রবার জানা গেল,আমদানি করা সমস্ত মার্কিন পণ্যের উপর অতিরিক্ত ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে চিন। শুধু তাই নয়, ১৬টি মার্কিন সংস্থাকেও চিহ্নিত করা হয়েছে। যাদের উপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে বেজিং। এছাড়া সাতটি দুর্লভ ধাতুর রপ্তানিতেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে চিনের বাণিজ্য মন্ত্রক। এতেই ক্ষান্ত না দিয়ে বিশ্ব বাণিজ্য (WTO) সংস্থায় আমেরিকার বিরুদ্ধে মামলা করতে চলছে তারা। এর ফলে বিপদে পড়বে আমেরিকার বহু ব্যবসায়ী। প্রভাব পড়বে মার্কিন অর্থনীতিতেও।

এই সিদ্ধান্তের পর চিনের স্টেট কাউন্সিল ট্যারিফ কমিশন জানিয়েছে, আমেরিকা এমন কিছু পদক্ষেপ করেছে যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়মের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। শুধু তাই নয়, এতে চিনের বৈধ অধিকার এবং স্বার্থকে গুরুতরভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তাই বার্তা দিতেই এহেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই বিভিন্ন জিনিসপত্রের উপর চিন সরকারের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের বাস্তবায়ন করা হবে। ফলে কমিউনিস্ট দেশটি এই সিদ্ধান্তে হোয়াইট হাউস কী করে সেটাই এখন দেখার।

প্রসঙ্গত, আমেরিকা যে যে দেশের উপর নয়া শুল্ক আরোপ করেছে তার মধ্যে চিনই প্রথম দেশ যারা পালটা কর চাপিয়ে ট্রাম্পের উপর 'প্রতিশোধ' নিল। রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়াকে বাদ দিয়ে চিন, ব্রিটেন-সহ বিভিন্ন দেশের উপর নয়া শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। বাদ দেননি ‘বন্ধু’ ভারতকেও। নয়াদিল্লির উপর ২৬ শতাংশ কর চাপিয়েছেন তিনি। যা নিয়ে এবার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রক। এদিকে, রীতিমত ‘যুদ্ধে’র হুঙ্কার দিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনি বলেছেন, “আমরা লড়াই করার জন্য প্রস্তুত। ট্রাম্প যে শুল্কযুদ্ধ শুরু করেছেন তাতে বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হবে। আমেরিকার এই পদক্ষেপ কানাডার লক্ষ লক্ষ নাগরিককে বিপদে ফেলবে। আমরা এর পালটা দেবই।” অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানিজের হুঁশিয়ারি, “এই অন্যায্য পদক্ষেপের জন্য আমেরিকার অনেক বড় মূল্য চোকাতে হবে।” বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার শুল্ক নিয়ে ট্রাম্পকে পালটা দিতে এক জোট হতে পারে এই দেশগুলো। যার সুযোগ নেবে চিন। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বুধবার গভীর রাতে 'শুল্ক-মিসাইল' ছুড়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। চিনের উপর ৩৪ শতাংশ কর চাপানোর ঘোষণা করেন তিনি।
  • যা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছিল বেজিং। হুঙ্কার দেওয়া হয়েছিল পালটা 'বদলা' নেওয়ার।
  • আর ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই 'শুল্কযুদ্ধে'র আগুনে ঘি ঢেলে আমেরিকার পণ্যের উপর অতিরিক্ত ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করল শি জিনপিংয়ের দেশ।
Advertisement