সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: ঝড়ের বেগে এগিয়ে চলেছে পৃথিবী। স্মার্টফোনের সাহায্যে হাতের মুঠোয় চলে এসেছে গোটা দুনিয়া। বিজ্ঞানের তীব্র অগ্রগতির যুগে আজও কিছু মানুষ কুসংস্কারের বাঁধনে আবদ্ধ। দিনভর ছেলের মৃতদেহ বাড়িতে রেখে চলল পুজোপাঠ। আশা একটাই ফের বেঁচে যাবে সন্তান। এই ঘটনায় ঝাড়গ্রাম থানার বামুনমারা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গ্রামবাসীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম ভাস্কর পাল (৪০)। শুক্রবার বেলা এগারোটা নাগাদ পুলিশ গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে খবর পেয়ে দেহ উদ্ধার করে। ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। ভাস্কর পাল দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। তিনি বাবা, মায়ের সঙ্গে থাকতেন। প্রতিবেশীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল আটটা নাগাদ ভাস্করের মৃত্যু হয়। কিন্ত তাঁর পরিবারের লোকজন কোনও চিকিৎসককে ডাকেননি। পরিবর্তে মৃত ছেলে পুনরায় জীবিত হয়ে ওঠার আশায় দেহ বাড়িতে রেখেই পুজো শুরু হয়।
[আরও পড়ুন: একদিকে ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’, অন্যদিকে ‘চেঙ্গিজ’, জিতের পাশে দেব-প্রসেনজিৎ-অঙ্কুশ]
এভাবে পুরো একদিন পেরিয়ে যায়। গ্রামবাসীরাই পুলিশকে খবর দেয়। তাঁর জানান, দেহ থেকে গন্ধ বেরোচ্ছিল। তারপরই ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। দেহ ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রতিবেশী প্রদীপ বেরা বলেন, “বৃহস্পতিবার সকাল আটটা নাগাদ ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। কোনও ডাক্তার দেখানো হয়নি। তারা পুজো করছিল। পুজো করে ভাবছিল হয়তো বেঁচে উঠবে। এখনও হয়তো কিছু মানুষ এমন কুস্কাংস্কারে বিশ্বাস করেন।” অন্যদিকে মৃতের বাবা প্রভাসচন্দ্র পাল বলেন, “আমরা ঝাড়ফুঁক করিনি। আমাদের বাড়িতে পুজো হয়।”
ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কল্যাণ সরকার বলেন, “বৃহস্পতিবার ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। পুলিশ গ্রামবাসীদের মাধ্যমে খবর পায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে চিকিৎসক মৃত বলে জানান। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ বোঝা যাবে। পুলিশ সবদিক খতিয়ে দেখছে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে।”