সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুর বাড়াতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এমনটাই মনে করছেন সংগীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র (Debojyoti Mishra)। কীসের ভিত্তিতে তাঁর এই দাবি? তাঁর মতে, মানুষের মনের ভিতরে প্রবেশ করার ক্ষমতা রয়েছে সংগীতের। আর তার মাধ্যমেই অবসাদের অন্ধকারকে দূর করে আশার আলো দেখানো সম্ভব। বিশেষ করে এই অতিমারী (Corona Pandemic) পরিস্থিতিতে। তাই কঠিন এই সময়ের সঙ্গে লড়াইয়ে ‘মিউজিক থেরাপি’কেই হাতিয়ার করেছেন দেবজ্যোতি মিশ্র। আর সেই তাগিদেই শুরু করেছেন ‘সঙ্গী হোক সুর’ অনুষ্ঠান।
প্রতি মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শনিবার করে এই ভারচুয়াল অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন দেবজ্যোতি মিশ্র। নিজের ফেসবুক পেজে জুম কলের আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে দিচ্ছেন যাতে যে কেউ ইচ্ছে করলেও এই ভারচুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন। কিছুক্ষণের জন্য যাবতীয় যন্ত্রণা ভুলে সুরের আশ্রয়ে থাকতে পারেন। ইতিমধ্যেই সুধেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌম্যদীপ ভট্টাচার্যর মতো চিকিৎসক এতে অংশগ্রহণ করেছেন। ছিলেন কুমার মুখোপাধ্যায়ের মতো ধ্রুপদী শিল্পী। গানের পাশাপাশি নানা বিষয় নিয়ে চর্চাও করা যাবে এই আড্ডায়।
[আরও পড়ুন: ‘রাধে রাধে’র সুরে ঘৃণা ভোলার বার্তা দিলেন ‘ভাইজান’ সলমন, দেখুন ভিডিও]
নিজের এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দেবজ্যোতি মিশ্র বলেন, “সংগীত নিয়ে চর্চার পাশাপাশি বিজ্ঞান নিয়েও চর্চা আমার বহু দিনের। এই যে আমরা বলি মিউজিকের একটা হিলিং পাওয়ার আছে। আমি বলি মিউজিকের ইমিউনিটি পাওয়ার আছে। আমার মনে হচ্ছিল পৃথিবী এখন আমার কাছে এখন একটা নতুন গান চায় না। তার থেকেও সরাসরি মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারাটা অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। গত বছরে শ্রমজীবী ক্যান্টিন যথেষ্ট ভাল কাজ করেছে। খুব ভাল সাড়া পাওয়া গিয়েছিল। একজন সংগীতশিল্পী হিসেবে মনে হচ্ছিল আমি নিজে এই মুহূর্তে দাড়িয়ে সমাজকে কী দিতে পারি। সেই থেকেই সুরের আশ্রয় নেওয়া। বহু মানুষ তাঁদের মতামত জানিয়েছেন প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে। আমরা গান নিয়ে আলোচনা করেছি।”
এরপরই আবার পোল্যান্ডের উদাহরণ দিয়ে বলেন, “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও যুদ্ধবিধ্বস্ত পোল্যান্ডের ওয়ারশ শহরে একদল ইহুদি ছেলেমেয়েকে সামিল করে রবীন্দ্রনাথের ‘ডাকঘর’ নাটকটি অভিনীত হয়। নাৎসি অধিগৃহীত পোল্যান্ডে ‘ডাকঘর’ নাটকের উপস্থাপনা মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়ানো অনাথ শিশুদের জীবনমন্ত্রে দীক্ষিত করেছিল। গানের, সুরের এই ক্ষমতা আমাদের এই যাত্রাপথের পাথেয়। অনেকেই মনে করেন মন খারাপের সময় করুণ রাগ শোনা ঠিক নয়। আমার মনে হয় যেকোনো সুরের মনের ওপর প্রভাব ফেলার ক্ষমতা আছে। ঠিক যেমন একটা অসুধ কাজ করে। মনে ভাল থাকার ইচ্ছা জাগিয়ে তোলে। কিছু ডাক্তারের কাছে শুনেছি তাঁরা আমার করা ‘টেগোর অন স্ট্রিংস’ অপারেশনের সময়ে চালিয়ে রাখেন। এর থেকেই সংগীতের ইমিউনিটি পাওয়ারের দিকটা বোঝা যায়।”