সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মন্দির-মসজিদ বিতর্কে উত্তাল দেশ। সম্প্রতি জ্ঞানবাপী মসজিদ মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। এহেন পরিস্থিতিয়ে এবার কুতুব মিনার (Qutab Minar) চত্বরে হিন্দু ও জৈন দেবদেবীর মূর্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে মামলা দায়ের হয়েছে দিল্লি আদালতে। শুধু তাই নয়, সেখানে প্রার্থনা করার অনুমতিও চেয়েছেন মামলাকারীরা। আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি।
[আরও পড়ুন: ‘জ্ঞানবাপী মসজিদের ‘শিবলিঙ্গ’ পুজো করতে চাই’, আদালতে যাচ্ছেন কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের মোহন্ত]
জানা গিয়েছে, জৈন সম্প্রদায়ের দেবতা ঋষভদেব ও হিন্দুদের ভগবান শ্রীহরি বিষুর হয়ে মামলাটি করেছেন আইনজীবী হরিশংকর জৈন ও রঞ্জনা অগ্নিহোত্রী। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (ASI) ইতিহাস সংক্রান্ত একটি নথি দেখিয়ে মামলাকারী দাবি করেন, কুতুব মিনার চত্বরে ২৭টি মন্দির ধ্বংস করে সেই পাথর দিয়ে কুয়াত-উল -ইসলাম মসজিদ তৈরি করেন মহম্মদ ঘোরির সেনানায়ক কুতুবুদ্দিন আইবাক। ওই চত্বর থেকে বিষ্ণু, কৃষ্ণ, গণেশ, যক্ষ-সহ বেশ কিছু দেবদেবীর মূর্তি পাওয়া গিয়েছে। শুধু তাই নয়, কলস ও পদ্মফুলের মতো পবিত্র সংকেত চিহ্ন এটা স্পষ্ট করে দেয় যে এটি আসলে হিন্দু মন্দির ছিল। এটা স্পষ্ট যে কুতুব মিনার চত্বরে বিষ্ণু ও ঋষভ দেবের বিশাল মন্দির ছিল। আজকের কুতুব মিনার আসলে তখনকার তৈরি মেরু ধ্বজ।
উল্লেখ্য, আগেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (VHP) দাবি করেছিল, এখন যেখানে অবস্থিত কুতুব মিনার (Qutub Minar), একসময় সেখানে ছিল ২৭টি হিন্দু মন্দির। সেই মন্দিরগুলি আবার নতুন করে নির্মাণ করতে দিতে হবে। সেই সঙ্গে সেখানে পূজা-প্রার্থনার সুযোগ দিতে হবে। তারপরই গত এপ্রিল মাসে কুতুব মিনার চত্বরের গণেশ মূর্তি সরানো নিয়ে দানা বাঁধে বিতর্ক। ন্যাশনাল মনুমেন্ট অথরিটি ওই মূর্তিগুলিকে সরাতে বলে প্রত্নতাত্বিক জরিপ বিভাগকে। তারপরই দিল্লির ওই আদালতে মামলা করেন হরিশংকর জৈন নামের এক আইনজীবী। মামলার আবেদনে বলা হয়, এএসআই কুতুব মিনার চত্বর থেকে গণেশ মূর্তি সরানোর পরিকল্পনা করেছে। ন্যাশানাল মনুমেন্ট অথরিটির আবেদনের ভিত্তিতে এই কাজ হতে চলেছে। মূর্তিটিকে জাতীয় জাদুঘরে স্থাপন করা হতে পারে। ওই আবেদনে আরও বলা হয়, কোটি কোটি হিন্দু গণেশ দেবের পুজো করেন। অথচ সেই মূর্তির রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দুঃখজনক পরিস্থিতি। শুনানি শেষে এএসআই-কে (ASI) ওই মূর্তি না সরানোর নির্দেশ দেয় দিল্লির একটি আদালত।
প্রসঙ্গত, ইউনেস্কোর ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এর অন্তর্গত কুতুব মিনার। ইঁটের তৈরি মিনারের মধ্যে এটিই বিশ্বের দীর্ঘতম। দৈর্ঘ্য ৭২.৫ মিটার। এখানে রয়েছে ৩৭৯টি ঘোরানো সিঁড়ি। ইতিহাস বলছে, কুতুবুদ্দিন আইবক এই মিনার তৈরি করান। যদিও সম্প্রতি হিন্দুত্ববাদীরা দাবি করেছেন, কুতুব মিনার চত্বরে ২৭টি মন্দির ছিল। তার মধ্যে অন্যতম জৈন তীর্থঙ্কর ভগবান ঋষভ দেবের উপাসনাস্থল-সহ ভগবান বিষ্ণু, গণেশ, শিব, সূর্য, হনুমান, দেবী গৌরীর মন্দির। সম্প্রতি পুরাতত্ত্ব বিভাগের এক প্রাক্তন আধিকারিক ধরমবীর শর্মাও দাবি করেন, কুতুব মিনার নির্মাণ করেছিলেন রাজা বিক্রমাদিত্য।