সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জেল বন্দিদের স্বার্থে এবার বড় ঘোষণা করল দিল্লির কেজরিওয়ালের সরকার। আম আদমি পার্টির সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, জেলের অন্দরে কোনও বন্দির অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে তাঁর পরিবারকে এককালীন ৭.৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করবে সরকার। ইতিমধ্যেই সরকারের এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে উপরাজ্যপাল ভি কে সাক্সেনার কাছে।
দুর্নীতি মামলায় একের পর এক নেতা-মন্ত্রীর পাশাপাশি জেলবন্দি খোদ মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ফলে জেলের অন্দরমহলের ছবিটা গত দুবছরে বেশ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে দিল্লির শাসকদলের কাছে। এই পরিস্থিতিতে জেলের অন্দরের গাফিলতি আটকাতে ও বন্দিদের পরিবারের কথা মাথায় রেখেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে কেজরি সরকার। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, জেলবন্দি অবস্থায় কারও যদি অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় তাহলেই মৃতের পরিবারকে দেওয়া হবে এই আর্থিক সাহয্য। মৃত্যুর কারণও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে এখানে। যেমন বন্দিদের মধ্যে মারামারি, জেলকর্মীর মার, শারীরিক নির্যাতন এছাড়া জেল আধিকারিক ও চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত্যু হলেই মিলবে সহায়তা।
[আরও পড়ুন: এবার মধ্যপ্রদেশে নেকড়ে আতঙ্ক, ‘নরখাদকের’ হামলায় জখম ৫, তটস্থ গোটা এলাকা]
তবে একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, জেলের মধ্যে যদি কেউ আত্মহত্যা করেন সেক্ষেত্রে এই সুবিধা পাওয়া যাবে না। পাশাপাশি পালানোর চেষ্টা, স্বাভাবিক মৃত্যু, বিপর্যয় ও অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হলে এই আর্থিক সাহায্য পাওয়া যাবে না। দিল্লির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী কৈলাস গেহলট বলেন, আমাদের এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হল জেলের ভেতর চলতে থাকা হিংসাত্মক ঘটনা ও গাফিলতি আটকানো। এই ধরনের ঘটনায় জেল সুপারকে বন্দি মৃত্যুর ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত রিপোর্ট, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট, মৃত্যুর কারণ, মৃত্যুর প্রাক্কালে যদি চিকিৎসা হয় সেই রিপোর্ট পেশ করতে হবে সরকারকে। সেই রিপোর্ট পাঠানো হবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে। এর পর জেলের ডিজির নেতৃত্বে সেই রিপোর্টের বিস্তারিত তদন্ত করবে একটি কমিটি। যদি দেখা যায় কারও গাফিলতিতে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত পুলিশকর্মী বা আধিকারিকের বেতন থেকে এই ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ফের বদলাপুর, জন্মদিনের পার্টিতে মাদক খাইয়ে যুবতীকে গণধর্ষণ!]
আপ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, জেলে মৃত্যুর ঘটনায় জেল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি আটকাতে ও জবাবদিহিতে বাধ্য করতেই এই পদক্ষেপ। নিয়ম অনুযায়ী, বিচার বিভাগীয় হেফাজতে যদি কোনও অভিযুক্তকে তিহাড় জেলে পাঠানো হয় সেক্ষেত্রে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব জেল কর্তৃপক্ষের থাকে। কিন্তু দেখা গিয়েছে, জেলে অভিযুক্তের উপর হামলা চালানো হয়েছে অথচ নিরাপত্তারক্ষীরা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সেই ধরনের ঘটনা আটকাতেই এবং মৃতের পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতেই এই উদ্যোগ বলে দাবি আপ সরকারের।