সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘একটি রাষ্ট্রে দুই প্রধান, দুই নিশান ও দুই বিধান থাকতে পারে না।’ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের এই বাক্যবন্ধ বিজেপির নীতি নির্ধারণে স্পষ্ট। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এক দেশ, এক আইনের পক্ষে সওয়াল করছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার। তবে বিরোধীদের প্রবল বাধায় তা এখনও কার্যকর হয়ে ওঠেনি। এবার কেন্দ্রকে স্বস্তি দিয়ে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির (Uniform Civil Code) পক্ষেই মত দিয়েছে দিল্লি হাই কোর্ট।
[আরও পড়ুন: তৃতীয় ঢেউয়ের প্রস্তুতিতে তৈরি হচ্ছে ১,৫০০টি অক্সিজেন প্লান্ট, বড় ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর]
ভারতীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসের অন্যতম লজ্জাজনক অধ্যায় শাহ বানো মামলার প্রসঙ্গ টেনে আদালতের পর্যবেক্ষণ, বিবাহ ও বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলায় ভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয় তা কাম্য নয়। দেশের নবপ্রজন্মকে এসব সমস্যার মুখে ঠেলে দেওয়ার কোনও অর্থ হয় না। জুলাই মাসের ৭ তারিখ দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি প্রতিভা এম সিং একটি আদেশনামায় স্পষ্ট লেখেন, “দেশে ধর্ম, সম্প্রদায় ও জাতপাতের ভেদাভেদ ক্রমশ মুছে যাচ্ছে। ফলে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি শুধুমাত্র একটি আশার আলো হয়ে থাকার কথা নয়। ভিন ধর্মে বিয়ে ও বিচ্ছেদের জন্য ভিন্ন আইনের জোটে যুব প্রজন্মকে জেরবার করার প্রয়োজন নেই।”
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রয়োজন কেন রয়েছে, সেই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক মামলা উদ্ধৃত করে দিল্লি হাই কোর্ট। বিশেষ করে ঐতিহাসিক শাহ বানো মামলার প্রসঙ্গ টেনে আদালত বলে, “সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৪-এর মতে নাগরিকদের জন্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তাই বিষয়টি শুধুমাত্র স্বপ্ন হয়ে থাকা উচিত নয়।” পাশাপাশি, অভিন্ন দেওয়ানি বিধির সপক্ষে সুপ্রিম কোর্টের যুক্তির কথাও তুলে ধরে আদালত। তবে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কী পদক্ষেপ করা হয়েছে তা স্পষ্ট নয় বলে কেন্দ্রকে একহাত নিয়েছে কোর্ট। একইসঙ্গে, আইনমন্ত্রকে এই বিষয়ে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি প্রতিভা সিং।