সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিবাহবিচ্ছিন্না বোনের দুঃসময়ে ভাই বা দাদা নীরব দর্শক হয়ে থাকতে পারে না। বিশেষত, বোনের যদি আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন হয়, তখন ভাইয়ের উচিত তাঁর পাশে এসে দাঁড়ানো। বুধবার একটি মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ দিল্লি হাই কোর্টের (Delhi High Court)।
বুধবার দিল্লি হাই কোর্টে একটি বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। যেখানে এক মামলাকারী প্রশ্ন তোলেন, কী ভাবে তাঁর বিবাহবিচ্ছিন্না ননদ প্রাক্তন স্বামীর উপর আর্থিকভাবে নির্ভর করতে পারেন? এই মামলাকে ভিত্তিহীন বলে আদালত। বিচারপতি শরণাকান্ত শর্মা বলেন, ‘‘আমার মতে, এই মামলার কোনও ভিত্তি নেই। ভারতের মতো দেশে ভাই-বোনের সম্পর্কের বন্ধন সব সময় অর্থনৈতিক ভাবে নির্ভর হবে, এমনটা নয়, কিন্তু ভাই বা বোনের আর্থিক প্রয়োজন হলে কিংবা, অন্য কোনও দরকারে তাঁরা পরস্পরের পাশে থাকবেন এটাই কাম্য।’’
[আরও পড়ুন: ১০০ দিনের কাজে বকেয়া ৭ হাজার কোটি টাকা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দ্বারস্থ তৃণমূল সংসদীয় প্রতিনিধি দল]
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘‘ভারতের বহু উৎসব, পরব রয়েছে, যেগুলো ভাই-বোন তথা পরিবারের মধ্যে স্নেহ, যত্ন, কর্তব্য এবং দায়িত্বের মতো অনুভূতিগুলোকে শক্তিশালী করে। তাই সত্যিকারের বোনের দুঃসময়ে ভাই এর পাশে থাকবেন, সেটাই স্বাভাবিক।’’
দিল্লি হাই কোর্ট এদিন যে বার্তা দেয় তা হল, কারও বিবাহবিচ্ছিন্না বোন বা দিদি তাঁর প্রাক্তন স্বামীর কাছে যেমন আইন মেনে ভরণপোষণের দাবি করতে পারেন। তেমনই সেই দিদি বা বোনের আর্থিক সহায়তার যদি দরকার হয় তবে ভাই বা দাদারও পাশে দাঁড়ানো উচিত। এক্ষেত্রে মানবিক ও নৈতিক কারণকেই গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করে আদালত।
[আরও পড়ুন: শিশু পাচারে প্রথম তিনে দুই বিজেপি শাসিত রাজ্য, দিল্লির পরিসংখ্যানও উদ্বেগজনক]
ক’দিন আগে দিল্লি হাই কোর্টে সম্পর্ক ও নৈতিকতার প্রশ্ন উঠেছিল বৈবাহিক ধর্ষণ (Marital Rape) সংক্রান্ত মামলাতেও। বৈবাহিক ধর্ষণ অপরাধ কিনা তা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত রায় দিয়েছিল আদালত। ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি রাজীব শকধের ও সি হরিশংকর আলাদা মত দিয়েছিলেন। বিচারপতি সি হরিশংকর বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মতপার্থক্যের কারণেই একমাত্র এই ধরনের অভিযোগ ওঠে। যাকে কখনওই সেই অর্থে অপরাধ বলে গণ্য করা ঠিক নয়। যদিও রাজীব শকধের বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ বলেই দাবি করেন। ওই মামলা পরে সুপ্রিম কোর্টে উঠেছে।