সুকুমার সরকার, ঢাকা: তিস্তা নিয়ে হাসিনা প্রশাসনকে হতাশ করলেন না বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। ঢাকায় তিনদিনের সফরে গিয়ে মঙ্গলবার সেখানকার বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন তিনি। সেখানে নদীর জলবণ্টন নিয়ে উভয়ের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সেখানে তিস্তা চুক্তি নিয়েও উভয়ের মধ্যে সদর্থক আলোচনা হয়েছে। এনিয়ে বাংলাদেশের আশা জিইয়ে রেখেছেন জয়শংকর।
[আরও পড়ুন: ভয় দেখিয়ে নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ভণ্ড পীর]
মঙ্গলবার দুপুরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত হয়ে বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর বলেন,‘‘দু দেশের জন্য লাভজনক হয়, এই পরিকল্পনামতো ৫৪টি নদীর অভিন্ন জলবণ্টন নিয়ে একটি ফর্মুলা বের করতে রাজি ভারত-বাংলাদেশ।’’ তিস্তা নিয়ে শেখ হাসিনার দীর্ঘদিনের দাবি নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে, জয়শংকর জানান, ‘‘এব্যাপারে আমাদের একটি প্রতিশ্রুতি রয়েছে। তার কোনও পরিবর্তন হয়নি।’’
অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জির তালিকা থেকে বাদ পড়া মানুষজনকে বাংলাদেশে পাঠানোর বিষয়টি নিয়েও এদিন সাংবাদিকরা বিদেশমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন। জয়শংকর তার উত্তর এড়িয়ে বলেন, ‘‘এটি একান্তভাবে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’’ রোহিঙ্গা প্রত্যর্পণ নিয়ে জয়শংকরের উত্তর, স্বেচ্ছা, নিরাপত্তা এবং মর্যাদার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের নিজেদের দেশে ফেরাতে ভারত সবরকম সাহায্য করতে প্রস্তুত। রাখাইনে ২৫০টি বাড়ি ভারত মায়ানমার সরকারকে হস্তান্তর করেছেন। সেভাবেই বাংলাদেশের চাপ কমাতে আলোচনা সাপেক্ষে আরও সদর্থক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সাংবাদিক বৈঠকে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেন, ‘‘ভারতের বিদেশমন্ত্রীর এই সফরে আমরা উৎফুল্ল।’’
চলতি বছরের মে মাসে নবগঠিত দ্বিতীয় মোদি সরকারের বিদেশমন্ত্রকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন একদা বিদেশ সচিব সুব্রহ্মণ্যম জয়শংকর। আর তারপর এটাই তাঁর প্রথম বাংলাদেশ সফর। তিন দিনের সফরে সোমবার রাতে ঢাকায় এসে পৌঁছান তিনি। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান সেদেশের বিদেশমন্ত্রী আবদুল মোমেন।বিকেলে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এস জয়শংকর।
[আরও পড়ুন: চিকিৎসা করাতে এসে বাড়ি ফেরা হল না, সমাধিস্থ জাগুয়ারের ধাক্কায় মৃত ঢাকার ২ বন্ধু]
এরপর বিদেশমন্ত্রী তিন দিনের সফর শেষে বুধবার সকালে ঢাকা ছেড়ে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে রওনা হবেন। তবে মঙ্গলবার দুই বিদেশমন্ত্রীর বৈঠকের পর তিস্তা চুক্তি নিয়ে আশা ফের উসকে উঠল। যদিও তিস্তা নিয়ে শুধুমাত্র কেন্দ্রের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত নয়, এরাজ্যের সিদ্ধান্তও সমান গুরুত্বপূর্ণ। সেখানেই একাধিক কারণ দেখিয়ে তিস্তার জল বাংলাদেশকে দিতে আপত্তি তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকল্প হিসেবে আত্রেয়ী, পুনর্ভবা নদীর জলবণ্টনের প্রস্তাব দেন। এখানেই তিস্তা চুক্তির জট। তা কাটিয়ে ওঠা যাবে বলে জয়শংকরের বাংলাদেশ সফর থেকে আশাবাদী ঢাকা।
The post তিস্তা নিয়ে প্রতিশ্রুতি থেকে সরছে না দিল্লি, ঢাকায় দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বললেন জয়শংকর appeared first on Sangbad Pratidin.