নব্যেন্দু হাজরা: “চুঁচুড়া থেকে করুণাময়ী যাওয়ার কোনও ভাড়ার গাড়ি বা বাস পাওয়া যাবে?” “বারাকপুর থেকে ডালহৌসি যেতে চাই। ভাড়ার গাড়ি থাকলে জানাবেন।” – ১৬ জুন থেকে বেসরকারি অফিস খোলার কথা হতেই গাড়ি ভাড়ার জন্য হুড়োহুড়ি সোশ্যাল মিডিয়ায়। মফস্বল থেকে কলকাতায় নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে গাড়ির খোঁজ প্রত্যেকের। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দেওয়াও শুরু করে দিয়েছে বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি। অফিসে কর্মীদের আনা-নেওয়ার জন্য গাড়ির খোঁজ শুরু করে দিয়েছে বিভিন্ন বেসরকারি অফিসও। কিছুটা প্রাণে জল এসেছে পুলকার, স্কুলবাস বা ছোট বাস যারা ভাড়া খাটান সেই সব পরিবহণ মালিকদের।
প্রায় দেড় বছর ধরে গাড়ির চাকা সেভাবে ঘোরেনি। মাঝে কয়েক মাসের জন্য অফিস যখন খুলেছিল, তখন কিছু ভাড়া খেটেছে। বাকি সময় গ্যারেজেই রয়েছে এই গাড়িগুলো। অনেকেই রোজগারের আশা না করে গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন। তবে সোমবার বিকেলে বেসরকারি অফিস খোলার ঘোষণায় কিছুটা মুখে হাসি ফুটেছে এই সমস্ত পুল কার এবং বেসরকারি ভাড়ার গাড়ির মালিকদের। অফিস খুললেও সরকারি এবং বেসরকারি পাবলিক বাস রাস্তায় নামবে না, লোকাল ট্রেন, মেট্রো বন্ধ। ফলে অফিসে যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে এই ধরনের ছোট গাড়ি ছাড়া উপায় নেই মানুষের। আর তাই পুলকারের চাহিদা বাড়তে পারে বলেই মনে করছেন অনেকে। সোমবার গড়িয়ার এক পুলকার মালিক জানান, ব্যান্ডেল থেকে এক ট্রাভেল এজেন্সি তাঁর কাছে কয়েকটি গাড়ি চেয়েছেন। তিনি চারটি গাড়ি পাঠাবেন। এমনই আরও ফোন আসবে বলেই মনে করছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘স্কুল খুললে খরচ, মদের দোকান খুললে লাভ’! নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে ফের রাজ্যকে খোঁচা দিলীপের]
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষবার চাকা গড়িয়েছিল পুলকারের (Pool Car)। অর্থাৎ বিগত ১৬ মাস ধরে এই ব্যবসা কার্যত বন্ধ। শুধু কলকাতায় আইনি-বেআইনি মিলিয়ে গড়ে সাড়ে পাঁচ হাজার গাড়ি রয়েছে। তার মধ্যে EMI দিতে না পেরে অনেকেই গাড়িই বিক্রি করে দিয়েছেন। সংসার চালানোই দায় হয়ে গিয়েছে অনেকের। এই অবস্থায় বর্তমান পরিস্থিতিতে এই পুলকার বা ছোট বাসের চাহিদা বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। পুলকার ওনার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ দত্ত বলেন, “অনেক জেলার গাড়ির এজেন্সি ফোন করে গাড়ি চাইছে। অফিসের জন্য ভাড়া খাটাবে বলে। দেখা যাক কিছুদিনের জন্য ব্যবসার হাল ফেরে কিনা!”