স্টাফ রিপোর্টার: প্রশাসনিক কর্মসূচি নয়। ডেঙ্গু (Dengue) নিয়ন্ত্রণকে অভিযান হিসাবে দেখতে হবে। চিকিৎসক, নার্স-সহ সব সরকারি কর্মচারী ও জনপ্রতিনিধিদেরও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অভিযান শুরু করতে হবে। নবান্ন থেকে এই বার্তা দিল প্রশাসনের শীর্ষমহল।
রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা পনেরো হাজার অতিক্রম করেছে। এই অবস্থায় কোমর বেঁধে নামতে হবে। বিশেষ করে পুজোর ছ’দিন ছুটি থাকলেও সরকারি হাসপাতালে যাতে পরিষেবায় শৈথিল্য না হয় তার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হাওড়ার ধাঁচে সব জেলায় ডেঙ্গু কল সেন্টার চালু করতে হবে। এদিন জেলাশাসক ও মুখ্য স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে এমন বার্তা দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদী। নবান্ন সূত্রে খবর, ডেঙ্গু মোকাবিলায় যুক্ত সব সরকারি কর্মীদের পুজোর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আক্রান্তদের জীবন বাঁচাতেই মুখ্যসচিবের এমন নির্দেশ।
[আরও পড়ুন: অনলাইন গেমে কোটি কোটি টাকা ‘প্রতারণা’, গাজিয়াবাদ থেকে গ্রেপ্তার গার্ডেনরিচের আমির খান]
স্বাস্থ্য দপ্তর ছাড়াও এদিনের আলোচনায় স্বাস্থ্য, পূর্ত, তথ্য ও সংস্কৃতি, সেচ ও জলপথ দপ্তরের প্রধান সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। নবান্ন সূত্রে খবর, জমা জল ও আবর্জনা অবিলম্বে পরিষ্কার করতে প্রতিটি পঞ্চায়েত ও ওয়ার্ডে পালস মুডে সাফাই অভিযান চালাতে হবে। এই বিশেষ অভিযান যাতে ফলপ্রসূ হয় তার জন্য প্রয়োজনে জনপ্রতিনিধিরাও অংশ নিতে পারেন। নবান্ন থেকে এমন বার্তাই এদিন দেওয়া হল।
কোভিড ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সময় স্বাস্থ্যভবনে ২৪ ঘণ্টার কল সেন্টার খোলা হয়েছিল। ঠিক সেই সময়ের মতো এবার ডেঙ্গু রোগীদের শারীরিক অবস্থা জানতে প্রতিটি জেলায় কলসেন্টার চালু করতে প্রস্তাব দিয়েছেন মুখ্যসচিব। নবান্নের এক কর্তার কথায়, অর্থাৎ বাড়িতে থাকা ডেঙ্গু রোগীর শারীরিক অবস্থার যদি অবনতি হয় তবে দ্রুত যাতে আরও ভাল চিকিৎসা শুরু করা যায় বা হাসপাতালে ভরতি করতে হয় তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ নবান্নের। পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে অন্তত পাঁচ ইউনিট প্লেটলেট আলাদা করে মজুত রাখতে বলা হয়েছে।
বৈঠকের পর এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “এমনও দেখা গিয়েছে প্লেটলেট জোগাড় করতে দেরি হওয়ায় রোগীর অবস্থার দ্রুত অবনতি হয়। আবার প্লেটলেট স্বাভাবিক থাকলেও হেমারেজিক ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ায় দ্রুত প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং প্লেটলেট পেতে দেরি হয়। কোনও সরকারি হাসপাতালে যাতে এমন দু’টি ঘটনা না হয় তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। কলকাতা হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, দার্জিলিং, কালিম্পং, উত্তর দিনাজপুরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়েছে। তাই ডেঙ্গু রোগীর জন্য কলসেন্টারের মতো প্রতিটি জেলায় বিশেষজ্ঞ দল তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যভবন থেকে ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞ দল হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ ও উত্তরবঙ্গের জেলা সফর করেছে। প্রোটোকল মেনে রোগীর চিকিৎসা হলেও আরও কিছু ব্যবস্থার সুপারিশ করেছেন। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, আগামী সোমবার ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এসওপি প্রকাশ হতে পারে।
[আরও পড়ুন: বুথে যাচ্ছেন না কেন? বঙ্গ বিজেপি নেতাদের কড়া ধমক কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের]
প্রতিটি জেলায় ডেঙ্গু মনিটরিং টিম তৈরি হচ্ছে। কোন চিকিৎসক কোন হাসপাতালে যাবেন তার সাপ্তাহিক শিডিউল তৈরি করা হচ্ছে। হয়েছে। ওষুধের দোকান থেকে প্যারাসিটামল কেনা হলে ক্রেতার মোবাইল নম্বর লিখে রাখতে হবে। প্রয়োজনে স্বাস্থ্য দপ্তর যোগাযোগ করে জানবে ডেঙ্গু আক্রান্ত কেউ রয়েছে কি না।