সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর জি কর কাণ্ড নিয়ে সরব গোটা শহর, গোটা রাজ্য, গোটা দেশ। আর জি কর কাণ্ডের বিরোধিতায় নিজেদের সহকর্মীর বিচার চেয়ে প্রতিবাদে সামিল হয় জুনিয়র ডাক্তাররা। প্রায় ১ মাস ধরে তাঁরা রাস্তায়, ক্রমাগত বিচারের দাবিতে সরব হয়েছেন। শহরের চিকিৎসা ব্যবস্থা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে কারণে নিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার অনুরোধ করেছিল স্বয়ং সুপ্রিম কোর্টও। তবে চিকিৎসকরা অনড়। ঠিক এমন পরিস্থিতিতেই সোশাল মিডিয়ায় দেবের খোলাখুলি বার্তা।
সোশাল মিডিয়ায় দেব লিখলেন, ''আমিও এই প্রাণ হারানোর বিচার চাই। আমিও চাই আমাদের আইনি ব্যবস্থায় বদল আসুক। কিন্তু অন্য প্রাণের বিনিময়ে নয়।''
প্রসঙ্গত, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের হত্যাকাণ্ড নিয়ে তোলপাড়। এই ঘটনার প্রতিবাদে কর্মবিরতিতে শামিল জুনিয়র চিকিৎসকরা। তারই মাঝে এবার ওই হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ। আর এই ঘটনার পর “পরিষেবা সচল রেখে আন্দোলন চালু রাখা”র আর্জি তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের।
কোন্নগরের বেঙ্গল ফাইন মোড়ে দুর্ঘটনার শিকার হন বিক্রম ভট্টাচার্য নামে ওই যুবক। বিবেক নগর দ্বারিক জঙ্গল বাই লেনে মা ও দিদিমার সঙ্গে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন তিনি। শুক্রবার ভোর তাঁর দুই পায়ের উপর দিয়ে লরি চলে যায়। প্রথমে শ্রীরামপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কলকাতায় স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তাঁকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কুণাল ঘোষের দাবি অনুযায়ী, সকাল ৯টা থেকে বেলা বারোটা পর্যন্ত রোগী পড়েছিলেন। তার পরেও তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। হাসপাতালের তরফে নাকি সাফ জানিয়েও দেওয়া হয়, ডাক্তার না থাকার ফলে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে যুবককে।
লাগাতার রক্তক্ষরণে ততক্ষণে অবশ্য ওই যুবক প্রায় ঝিমিয়ে পড়েছেন। শেষমেশ রাত ১২টা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। X হ্যান্ডেলে একথা উল্লেখ করে তৃণমূল নেতা আন্দোলনের পাশাপাশি চিকিৎসা পরিষেবাও চালু রাখার আর্জি জানান। প্রসঙ্গত, এর আগে সুপ্রিম কোর্ট, কলকাতা হাই কোর্ট এমনকী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের কাজে ফেরার আহ্বান জানান।
সদ্য সন্তানহারা মায়ের একটাই আক্ষেপ, “সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে হয়তো ছেলেটা বেঁচে যেত।” তিনি আরও বলেন, “আর জি করের তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে যা হয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। দোষীদের কঠোরতম সাজা হওয়া উচিত। কিন্তু আমাদের মতো গরিব মানুষ সরকারি হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোথাও যাওয়ার মতো সামর্থ্য নেই। তাহলে এভাবে বিনা চিকিৎসায় হয়তো ছেলেটাকে মরতে হত না!”